পাইলস রোগটি এতই মারাত্মক এবং জটিল যে জীবনযাত্রাকে কুরে কুরে ধ্বংস করে দেয়। কাজকর্মে প্রচুর বাধার সৃষ্টি করে দেয় এবং মুখের হাসি পর্যন্ত বিলীন হয়ে যায়। আমি আমার ব্লগে এ গুরুত্বপূর্ণ টপিকটি নিয়ে আলোচনা করব। যাতে করে রোগটি আমরা চিহ্নিত করতে পারি এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত চিকিৎসা নিতে পারি। আশা করছি আপনারা আমার সাথে থাকবেন, চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
পাইলস (Piles or Haemorrhoids)কাকে বলে পাইলস?
পাইলস (Piles or Haemorrhoids) মলদ্বারের রক্তনালীগুলোর প্রদাহ এবং ফুলে যাওয়ার ফলে ঘটে। মলদ্বারের বাইরে বা ভিতরের চারিদিকের শিরাগুলো যদি কোন কারণ বশত প্রসারিত হয়ে মটর দানার মত ফুলে ওঠে তবে এই লক্ষণকে পাইলস (Piles or Haemorrhoids) বলা হয়।
এই স্ফীত এবং প্রসারিত শিরাগুলোকে বলি বলে।মলদ্বারের ভিতরে এবং বাহিরের শিরা স্ফীত, চর্ম শক্ত এবং কুঞ্চিত হয়ে ছোট ছোট বলি সৃষ্টি হয়। এই বলি কখনো একটি মাত্র দেখা যায় আবার কখনো আংগুর ফলের গুচ্ছের ন্যায় দেখা যায়। এই বলি দু ভাবে হতে পারে, অন্তর বলি এবং বহির বলি।
চিকিৎসা
পাইলস এর চিকিৎসায় কি কি হোমিওপ্যাথি ঔষধ
আসুন জেনে নেয়া যাক পাইলসের চিকিৎসায় কি কি হোমিওপ্যাথি ঔষধ আমরা প্রয়োগ করে থাকি। তবে একটি কথা না বললেই নয়, তা হল – এই ঔষধ গুলো একমাত্র অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার প্রয়োগ করতে পারবেন। তিনি রোগীর অন্যান্য সিম্পটমের সাথে এই সিম্পটম গুলো যদি পেয়ে থাকেন তখন দিয়ে থাকেন। এটা কোন রোগী নিজে নিজে ওষুধ খাওয়ার জন্য নয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া উচিত।
ইস্কিউলাস(Aesculus Hippocastanum)
শুষ্ক কনকনে ব্যথা, মনে হয় মলদ্বার ছোট ছোট কাঠিতে ভর্তি। মলদ্বারে হেজে যাওয়ার মত ব্যথাযুক্ত।মলত্যাগের পর অধিক যন্ত্রণা, মলদ্বারের স্থানচ্যুতি। সাথে ক্ষত, তীর বেদার মত যন্ত্রণা তবে এতে কোন ব্লাড থাকে না। যন্ত্রণা সারা পিঠে ছড়িয়ে পড়ে। রজলোপকালে পাইলস বৃদ্ধি। পাইলস বা বলি বেগুনীবর্ণের। মলদ্বার ব্যথাযুক্ত এবং শুষ্ক। মলত্যাগের পর অত্যন্ত যন্ত্রণা বোধ। গোল কৃমির জন্য মলদ্বারে অস্বস্তি এবং এটি বারবার চলতে থাকে। মলদ্বারে পুড়ে যাবার মতো অনুভূতি তার সাথে শীত, এই শীত বা পিঠের উপর থেকে নিচের দিকে চলতে থাকে।
একোনাইট ন্যাপ(Aconitum napellus)
জ্বর সহ অস্থিরতা। প্রচণ্ড যন্ত্রণা বোধ, গরম বোধ, শ্লেষ্মা বা রক্ত নিঃসরণ। রাত্রে পায়খানার রাস্তায় চুলকায়, সূচিবিদ্ধ যন্ত্রণা। কুন্থন সহ বারে বারে একটু একটু পায়খানা। পায়খানা তরল অনেকটা উদরাময়ের ভাব। শাক সব্জির মতো টুকরো টুকরো সবুজ মল। অত্যন্ত ভয় এবং উদ্বেগ। অস্থিরতা, রোগীর মনে মৃত্যু ভয়। মাথা ভারী এবং মাথায় যন্ত্রণা বোধ। রক্তযুক্ত পাইলস।
আর্সেনিক এলবাম(Arsenic Album)
গরম বোধ, মনে হয় পাইলসর ভিতর গরম সূচ ফোটান হচ্ছে, পিঠে অসহ্য বেদনা। বলি নির্গত হওয়া, দুর্বলতার ভাব। সরলাস্ত্র অত্যন্ত বেদনাযুক্ত। কুন্থন ভাব। সরলান্ত্রে এবং গুহ্যদ্বার জ্বালাকর বেদনা এবং চাপ বোধ। মল অতি অল্প এবং কালোবর্ণ, বিশ্রী দুর্গন্ধ। তার সাথে মৃত্যু ভয় এবং অস্থিরতা।

কলিনসোনিয়া ক্যানাডেন্সিস(Collinsonia Canadensis)
মনে হয় গুহ্যদ্বারে কাঠি ভরা আছে। গুহ্যদ্বার শুষ্ক। কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পাইলস, পুরাতন দুরারোগ্য কোষ্ঠকাঠিন্য, মলদ্বারে চুলকানি। গর্ভাবস্থায় কুষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস। রক্তস্রাবী বা অন্ধ পাইলস, মলদ্বারে ভার বোধ।গর্ভাবস্থায় পাইলসের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
র্যাটানহিয়া(Ratanhia)
কন্কন করে, মনে হয় যেন এর মধ্যে কাঁচভাঙ্গাতে পূর্ণ রয়েছে। মলত্যাগের পর বহু ঘন্টা পর্যন্ত মলদ্বার ককন এবং জ্বালা করে।সঙ্কুচিত অনুভূত হয়। গুহ্যদ্বারে শুষ্ক উত্তাপ, তৎসহ অকস্মাৎ ছুরি দ্বারা খোঁচামারাবৎ বেদনা। মল বহু চেষ্টা করে জোর দিয়ে বাহির করতে হয়। অর্শের বলিগুলি বের হয়ে পড়ে। পায়খানার রাস্তায় ফাটা- ঘা, তার সাথে প্রবল সঙ্কোচন এবং অগ্নির ন্যায় জ্বালা, পাইলসেও এই প্রকার জ্বালা করে। শীতল পানি প্রয়োগ করলে উপশম । উদরাময়, মল দুর্গন্ধযুক্ত এবং পাতলা। মল নির্গমনকালে জ্বালা, মলত্যাগের পূর্বে ও পরে জ্বালাকর বেদনা। মলদ্বারে স্রাব হতে থাকে। সুতার ন্যায় সরু এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃমি। (স্যান্টোনাইন, টিউক্রিয়াম, স্পাইজেলিয়া) মলদ্বারে চুলকানি।
সালফার(Sulfur)
অত্যন্ত কোষ্ঠকাঠিন্য, ছোট ছোট গুল গুল রক্তময় মল। পায়খানার রাস্তায় বলি। রক্ত মিশ্রিত মল তৎসহ চুলকানি। পেট ব্যথা ও বুক ধড়ফড় করা। পায়খানার রাস্তার চারিদিকে লালবর্ণ জ্বালাপোড়া ও কুট কুট করে। বার বার মলত্যাগের ইচ্ছা কিন্তু আদৌ মলত্যাগ হয় না, বার বার নিষ্ফল মল বেগ। মল গাট গাট এবং সামান্য। ভয়ে পায়খানা করতে চায় না। রোগী শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে অত্যন্ত নোংরা।
গ্রাফাইটিস(Graphites)
পায়খানার সময় অত্যন্ত কষ্ট বোধ করে। বলি অপেক্ষাকৃত বড়, চেপে বসলে যন্ত্রণা। হাঁটাচলা করার সময় ভীষণ বেদনা বোধ। মাঝে মাঝে মলদ্বার কুটকুট করে, ভীষণ স্পর্শকাতরতা। মলদ্বার, ফেটে যায়। মলদ্বার শিরা স্ফীতি। মলদ্বারের স্থানচ্যুতি। মলদ্বারে ছুরি দিয়ে কাটার ন্যায় ব্যথা অনুভব। মল দলা দলা এবং আম মিশ্রিত৷ মলে অত্যন্ত দুর্গন্ধ।
হ্যামামেলিস(Hamamelis virginiana)
পাইলসের বলি হতে প্রচুর পরিমাণে রক্ত পড়ে। এক আঃ পানির মধ্যে ১০ ফোঁটা ৪ মিশিয়ে পরিষ্কার ন্যাকড়া ভিজিয়ে বাহির বলির উপর পট্টি দিলে রক্তস্রাব বন্ধ হয়। পায়খানার রাস্তা ক্ষত হয়, আমাশয় ভাব। পায়খানার রাস্তা দপদপ করে। রক্তক্ষরণজনিত পাইলসের চিকিৎসায় কার্যকর।
এলোজ (Aloe Socotrina)
থোকা থোকা বলি, মনে হয় গুহ্যদ্বার নিচের দিকে নেমে আসছে। পাইলস বলিতে জ্বালাপোড়া ভাব, দপ দপ করা। মলদ্বারের তীব্র ব্যথা ও ফুলে যায়। গরম বোধ, টাটানি, ভগন্দর, রক্তস্রাব। পেট ফাঁপ, তরল মল, বায়ু নিঃসরণ। গোগুল বের হয়, মল যেন আটকিয়ে আসে। স্পর্শকাতরতা, মল তরল। মলত্যাগ যন্ত্রণাদায়ক। পাইলস বলি দেখতে আংগুর ফলের মত দেখায়। রক্তপাতজনিত পাইলসে কার্যকর।
মিলিফোলিয়াম(Millefolium)
অত্যন্ত রক্তস্রাব, পাইলস বলিতে অত্যন্ত বেদনা। নানা প্রকার রক্তস্রাবে মিলিফোলিয়াম উপকারী। বলি হতে নির্গত রক্ত উজ্জ্বল লাল। রক্ত বমন। মাথা ঘোরা, মনে হয় মস্তক রক্তে পূর্ণ। অন্ত্র হতে রক্তস্রাবী পাইলস।
ক্যাপসিকাম(Capsicum)
মরিচের ন্যায় পাইলস জ্বালাপোড়া ভাব, সরলান্ত্রে এবং মূত্রাশয়ে বেগ বোধ, আঠা আঠা আমের সংগে মিশ্রিত কালো রক্ত। মলত্যাগের পূর্বে উদরে ভীষণ বেদনার ভাব। মলত্যাগের সময় প্রচণ্ড যন্ত্রণা এবং মোচড়ানো ব্যথা। কুন্থন ভাব, মলত্যাগের পর কুন্থন, পিপাসা, পিঠে বেদনা, পাইলস বলির স্ফীত ভাব, মলদ্বারে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া।
ইগ্নেসিয়া(Ignesia Amara)
মলদ্বারে এবং সরলান্ত্রে চাপ বোধ, স্পর্শকাতরতা সহ অস্রাবী পাইলস, বসলে বা দাঁড়ালে বেদনার সৃষ্টি, হাঁটার সময় বেদনা কম। সরলান্ত্রে তীব্র জ্বালাকর বেদনা, হাঁটাচলা করলে সরলাস্ত্র নির্গমন।
থুজা(Thuja orientalis)
সাইকোসিস ধাতুর রোগীদের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। স্ফীত পাইলস বলি, হাঁটলে বা বসলে বেদনার বৃদ্ধি, পাইলস বলিতে চাপবোধ, চর্ম উদ্ভেদ এবং জ্বালাকর। মলদ্বার সর্বদাই ভিজা ভিজা থাকে।
মার্ক ভাইভাস(Mercurius vivus)
বহিরাগত বলি, মলদ্বার হতে রক্ত মিশ্রিত শ্লেষ্মা স্রাব। সাথে থাকে প্রচুর ঘর্ম প্রচুর পিপাসা। মার্ক ভাইভাস থুজার পরে ভাল কাজ করে।
নাইট্রিক এসিড(Nitric acid)
মলদ্বারে জ্বালাপোড়া এবং চুলকানি, ভয়ানক যন্ত্রণা, মলত্যাগের পর কেটে ফেলার মত বেদনা, পাইলস বলি, বেরিয়ে আসতে চায়, কোষ্ঠকাঠিন্য, মলদ্বার ফেটে যায়।
Read more:Acid Nitric হোমিওপ্যাথি মেডিসিন
ফসফরাস(Phosphorus)
বহিরাগত পাইলস বলি, রক্তস্রাব, কোষ্ঠকাঠিন্য মলদ্বার ভিজা, মলদ্বার ফেটে যায়। সরলান্ত্রের খেচুনি ভাব এবং সংকোচন।ঠান্ডা পানি এবং ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রচুর আকাঙ্ক্ষা।
পিওনিয়া(Paeonia)
মলদ্বারে কামড়ায় ও চুলকায়,পায়খানার রাস্তায় ছিদ্র ফুলে উঠে, মলত্যাগের পর মলদ্বারে জালা এবং পরে শরীরের অভ্যন্তরে শীতবোধ।প্রতিবার মলত্যাগ করার সময় ও মলত্যাগের পর তীব্র বেদনা। হঠাৎ করে আঠার লেইয়ের মত উদরাময় তার সাথে তলপেটে অবসন্নতা।
অ্যামোনিয়াম কার্ব (Ammonium carb)
মলত্যাগের পূর্বে মলত্যাগকালে এবং পরে বলি নির্গত হয়, মলদ্বারে জ্বালাপোড়া, চুলকানি, ঋতুকালে বৃদ্ধি।তার সাথে থাকে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার প্রবণতা।
এসিড মিউর(ACID MUR)
মলদ্বারের অতিশয় অনুভব শক্তি, চুলকানি, মলদ্বার আবরণী পেশীর দুর্বলতা, বলি বেরিয়ে আসার প্রবণতা।

পাইলসের প্রকার
পাইলসর রূপ এবং আকৃতি গত বৈশিষ্ট্যানুসারে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
1. বহির বলি (External piles)
2. অন্তর বলি (Internal Piles)
3. মিশ্রিত বলি (Mixed piles)
বহির বলি: মলদ্বারে সঙ্কোচন পেশীর বহির্ভাগে এই বলি হয়। এই বলিতে সাধারণত রক্তস্রাব হয় না এবং ক্ষত বা ঘায়ের সৃষ্টি হয় না। এটা চামড়ার দ্বারা আবৃত থাকে।
অন্তর বলি: মলদ্বারে সামান্য কিছু ভিতরের দিকে এই বলি সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই বলি সাধারণত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর (Mucous membrane) দ্বারা আবৃত থাকে এবং এতে রক্তস্রাব হয়। এটাকে রক্তস্রাবী বলি বলে।
এটা প্রথম অবস্থায় মলদ্বারের ভিতরেই থাকে এবং মলত্যাগকালে বের হয়ে আসে না। এই বলি নরম শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর(Mucous membrane) দ্বারা আবৃত থাকে বলে ইহাতে সহজেই আঘাত লাগে, ক্ষত হয় এবং রক্তস্রাব হয়।
বলি সম্প্রসারণের সংগে সংগে এই নরম আবরণ ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে উঠে এবং এই অবস্থায় সাধারণত রক্তস্রাব হয় না। কিন্তু বলি যখন বেশী প্রসারিত হয় তখন পায়খানার সময় বা কুন্থনে বলি বের হয়ে আসে এবং রক্তস্রাব হয়। বলি যখনই বের হয়ে আসে তখনই মলদ্বারের পেশীর স্বাভাবিক সংকোচন ঘটে ।
এইরূপ সংকোচনের ফলে বলির উপর পেশীর চাপ পড়ে, এতে বলির প্রদাহ এবং জ্বালাপোড়াভাবের সৃষ্টি হয় ফলে রক্তস্রাব বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় বলি স্বাভাবিকভাবে মলদ্বারের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না তখন আঙুল দিয়ে অনেক কষ্ট করে ভেতরে ঠেলে দিতে হয়।
এই ভাবে বার বার বাইরে আসা এবং জোর করে ভিতরে প্রবেশ করানোর জন্য মলদ্বারের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পেশীর শিথিল অবস্থা দেখা দেয়।এই অবস্থায় পায়খানা বা কুন্থন ছাড়াই বলি বের হয়ে পড়ে। যখন এই রোগ ক্রনিক হয়ে যায় তখন বলি আর ভিতরে থাকে না, সর্বদাই বাইরে থাকে।
মিশ্রিত বলি: এই বলির কিছুটা মলদ্বারের বাইরে এবং কিছু অংশ ভিতরে থাকে। এই বলির বাইরের অংশ চামড়ার দ্বারা এবং ভিতরের অংশ শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর দ্বারা আবৃত থাকে। ভিতরের যে অংশটুকু শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর(Mucous membrane) দ্বারা আবৃত থাকে সেখান থেকেই রক্তস্রাব হয়। এই জন্য ইহার ভিতরের অংশ রক্তস্রাবী।
পাইলস রোগের কারণ
বিভিন্ন কারণে পাইলস রোগ দেখা দিতে পারে –
- • কোষ্ঠকাঠিন্য দোষের জন্য অতিরিক্ত কুন্থন দিয়ে পায়খানা
• আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া
• উত্তেজক, উগ্র জাতীয় ঔষধ সেবন এবং তীব্র উপশমকারী ঔষধ সেবন
• সর্বদা বসে কাজ করা, উগ্র মশলাযুক্ত, তৈল ঘৃত পক্ক খাদ্য গ্রহণ
• যকৃতে রক্তাধিক্য অথবা লিভার সিরোসিস রোগ হলে
• মলত্যাগের সময় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে মলদ্বারে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়
• অজীর্ণ রোগ এবং পরিপাক যন্ত্রের বিকলতার জন্য
• প্রটেট গ্রন্থির বৃদ্ধি বা মূত্রনালীর পীড়ায় অতিরিক্ত কুন্থন দিয়ে মূত্র ত্যাগ
• পূর্ণ গর্ভাবস্থায় জরায়ুর উপর চাপ।গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে পেটের নিচের অংশে চাপ পড়ে
• পুরাতন আমাশয়, দীর্ঘস্থায়ী উদরাময় বা বহুদিন ধরে চলা কঠিন রোগে আক্রান্ত।
• ভারী ওজন তোলা বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পেটের নিচের অংশে চাপ পড়ে এবং পাইলস হতে পারে
• নানা কারণে শিরাতে চাপ এবং উহার ফলে সৃষ্ট Venous engorgement অবস্থা
• বংশগত রোগ বা পিতা মাতার রোগ থাকলে সন্তানদের মধ্যে দেখা দিতে পারে
পাইলস রোগের লক্ষণ
কখনো কখনো বলিগুলো চুলকায়, দপদপ করে এবং জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে। রোগী কাঁটা বিদ্ধের ন্যায় বেদনা এবং যন্ত্রণা বোধ করে, কটি দেশে বেদনা হয়। যদি মলত্যাগকালে বলি হতে রক্তস্রাব না হয় তবে অস্রাবী বা অন্ধ পাইলস বলে। বলি যতক্ষণ ভিতরে থাকে এবং রক্তস্রাব হয় না ততক্ষণ বিশেষ কোন লক্ষণ প্রকাশ লাভ করে না।
কেবলমাত্র মলদ্বারের ভিতরে ভারবোধ এবং পায়খানার সময় বা আগে পরে বেদনা অনুভব করে। রোগী মনে করে কি একটা জিনিস মলদ্বারের ভিতরে আটকে আছে। রক্তস্রাব আরম্ভ হলে লক্ষণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। দুর্বলতা, রক্তহীনতা, হাত পা চোখের পাতায় জল ভরা, ফোড়া নালী ঘা দেখা দেয়।
পায়খানার সঙ্গে বা আগে পড়ে রক্তপাত হয়, অনেক সময় ব্যথা মাথা ধরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। মলদ্বারের শিরাগুলোতে রক্ত জমাট হয়, মলদ্বারে কোষ্ঠকাঠিন্যের ভাব হলে রক্তস্রাব হয়। অনেক সময় ব্লাড প্রেসারের সঙ্গে পাইলস হয়। মাঝে মাঝে পায়খানা নরম হলে রক্তস্রাব নাও হতে পারে । এই রক্তস্রাব হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয়।
হৃদপিণ্ডের দুর্বলতা, মাথা ধরা, মাথায় যন্ত্রণা হয়। ক্রমাগত রক্তপাত চলতে থাকলে অন্যান্য লক্ষণাদি প্রকাশ পেতে পারে। মলদ্বারে প্রেসার বৃদ্ধি পায় তখন রক্তপাত ঘটে এবং রোগী কিছুটা উপশম বোধ করে। এই ক্ষেত্রে ফোড়া, ঘা, নালী ঘা এবং তা থেকে বিষক্রিয়া (sepsis) হতে পারে। অতিরিক্ত রক্তপাতের জন্য রোগীর রক্তহীনতার রোগ দেখা দিতে পারে এবং খুব দুর্বল হয়ে পড়ে ।
পাইলস রোগ নির্ণয়
একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে বাইরে এবং ভিতরে বলি দেখা যাবে। পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত পড়ে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে বেশি রক্তস্রাব হয় এবং নরম পায়খানা করলে কম রক্তস্রাব বা আবার নাও হতে পারে।
আপনি যদি পাইলস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাকে জানাতে পারেন। আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
সিটি হোমিও রূপায়ন মিলেনিয়াম স্কয়ার,
দোকান নং-116( গ্রাউন্ড ফ্লোর -70, 70/Aপ্রগতি শরণি,
উত্তর বাড্ডা, ঢাকা 1212,বাংলাদেশ।
01736181642