হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিভাবে কাজ করে(2025)- এখানে কয়েকটি অতি প্রয়োজনীয় ঔষধ এর সংক্ষিপ্ত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এমন কিছু ঔষধ এখানে দেওয়া হলো যেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিভিন্ন অবস্থায় লক্ষণের ভিত্তিতে রোগীকে দিয়ে থাকি এবং হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিভাবে কাজ করে,তা তুলে ধরা হলো। ঔষধগুলো হলো –

- অনসমোডিয়াম(Onosmodium)
- স্যাবাল সেরুলেটা(Sabal Serulata)
- স্টিকটা পালমোনারিয়া(Sticta)
- লেপট্যান্ড্রা (Laptandra)
- সালফার আয়োড(Sulph Iod)
- ক্লিমেটিস ইরেক্টা(Clematis Irecta)
- মর্বিলাইনাম(Morbillinum)
- বিসমাথ(Bismuth)
- অরাম মিউরিটিকাম নেট্রো (Auram Muriaticum Nat)
- ট্যাবেকাম (Tabacum)
- ক্যালি আয়োড (Kali Iod)
- বিউফো (Bufo)
- ক্যালেডিয়াম সেক(Caladium Seg)
- ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম(Uranium Nitricum)
- এক্স-রে X-ray
- ফ্লোরিক এসিড (Fluoric Acid)
বিভিন্ন রোগে হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিভাবে কাজ করে
হোমিওপ্যাথি রোগের নাম দিয়ে চিকিৎসা করে না, লক্ষণের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়।সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু ঔষধের চিত্র তুলে ধরা হলো-যেন আমরা রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারি।
অনসমোডিয়াম(Onosmodium)
অনসমোডিয়াম ক্রনিক মাথা ব্যথা বিশেষ করে আধকপালি মাথা ব্যথায় বা মাইগ্রেনে মাথার বাম দিকের যন্ত্রণায়, বাম চোখের ও নাকের যে কোনো যন্ত্রণায়, ও যৌন সম্বন্ধীয় দুর্বলতা থেকে মাথার যন্ত্রণা এবং অবিবাহিত মেয়েদের মাসিকের ব্যথায় মূল্যবান একটি ঔষধ।
তার সাথে যদি থাকে জেনিটাল অর্গানের নারী পুরুষের যৌন স্পৃহা কম। বিশেষ করে মেয়েদের যৌন দুর্বলতায় কার্যকরী ঔষধ। মেয়েদের মাথা ঘোরায়, স্নায়ুবিক দুর্বলতায়, মাংসপেশীর অসাড়তায় ও দুর্বলতায়, চোখের কাজ করা থেকে বাম পাশের মাথা যন্ত্রণার খুবই কার্যকরী এই হোমিওপ্যাথি ঔষধে চিকিৎসা ।
স্যাবাল সেরুলেটা(Sabal Serulata)
প্রোস্টেট বৃদ্ধিতে এবং শীর্ণকায় নারীদের বয়োবৃদ্ধির সত্বেও স্তনের পূর্ণতা প্রাপ্তি না হলে স্যাবাল সেরুলেটা একটি মূল্যবান ঔষধ ।যদি এর সাথে আমরা মেডুসা ঔষুধের সাথে তুলনা করে ঔষধ নির্বাচন করতে পারি।
তাছাড়া ছেলেদের অন্ডকোষ শুকিয়ে যেতে থাকলে এবং সেক্স এর অভাব, তার সাথে যদি প্রোস্টেটের বৃদ্ধি থাকে সে ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি ঔষধ স্যাবাল সেরুলেটা কিভাবে কাজ করে তা তুলে ধরা হলে ।
Read More:প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর সমস্যার
স্টিকটা পালমোনারিয়া(Sticta)
হে ফেভার, হাঁচি নাক দিয়ে পানি পড়া কিংবা শুকনো সাইনোসাইটিসের বা দীর্ঘ দিনের সাইনোসাইটিসের ও যদি দেখা যায় নাকের ঠিক উপরে কপালে, চোখের উপরে কপালে দারুন ব্যথা-যন্ত্রণা থাকে, নাকের উপরে কষ্ট,অস্বস্তি বর্তমান থাকে,রাত্রে কাশির বৃদ্ধি,যক্ষায় কাশি,হামের পর কাশি,ইনফ্লুয়েঞ্জার পর কাশির জন্য নির্দিষ্ট ঔষধ এই স্টিকটা।
লেপট্যান্ড্রা (Laptandra)
অন্ত্রের(Intestinal)রক্তক্ষরণের একটি মূল্যবান ঔষধ হলো লেপট্যান্ডা। এই লেপট্যান্ডার মধ্যে যদি দেখা যায় পিচের মত কুচকুচে কালো এবং দুর্গন্ধযুক্ত প্রচুর মল নির্গত হয় লিভারের অসুখে টাইফয়েডের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে, পেপটিক আলসারের রক্তক্ষরণে নির্ভরযোগ্য ঔষধ হিসেবে গণ্য হয়।

সালফার আয়োড(Sulph Iod)
ক্ষৌর জনিত উদ্ভেদ(Baber’s itch) চর্মরোগে, মুখের দাদে, খোস পাঁচড়া থেকে প্রচুর চুলকানি ও রস নিঃসরণে একটি মূল্যবান এই সালফার আয়োড। তবে এর সাথে থুজার তুলনার প্রয়োজন আছে।
ক্লিমেটিস ইরেক্টা(Clematis Irecta)
যদি বংশে গনোরিয়া, সিফিলিস জাতীয় অসুখের ইতিহাস থাকে, সাধারণত স্টিকাচার ইউরেথ্রা অসুখটির শুরুতে, ক্লিমেটিস এর কথা আমরা চিন্তা করতে পারি। পুরুষদের ডান দিকের অন্ডকোষের বৃদ্ধিতে ও যন্ত্রণায়, প্রস্রাব নির্গমনে বাধাপ্রাপ্ত হলে এবং সরু সুতার মত প্রস্রাবে হলে মহা মূল্যবান হয়ে যায় ক্লিমেটিস ইরেক্টা।
Read More:হোমিও ঔষধের নামের তালিকা ও কাজ
মর্বিলাইনাম(Morbillinum)
হামের উপসর্গে উপযুক্ত ঔষধ ব্যর্থ হলে এই ঔষধটি দিতে পারি। এটা হামের বিষ হতে উৎপন্ন হয়েছে। হামের পর হুপিং কাশি দেখা দিলে, হামের উপসর্গগুলি দীর্ঘ দিন বর্তমান থাকলে মর্বিলাইনাম ঔষধটি দিলে কখনো ব্যর্থ হয় না।
বিসমাথ(Bismuth)
অস্বস্তিকর কাশিতে, প্রচুর বমিতে, আর্সেনিক সুফল না দিলে, পানি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বমিতে, পেটে ভার বোধ বর্তমান থাকলে বিসমাথ প্রয়োগ করে সুফল মেলে।বিসমাথ এর বমি ঠান্ডা পানি খেলে উপশম হয়। এর সঙ্গে ফসফরাস সাথে তুলনীয়।
অরাম মিউরিটিকাম নেট্রো (Auram Muriaticum Nat)
এই ঔষধটি মেয়েদের vagia পেটেন্ট ঔষধের মতো কাজ করে। জরায়ুর ফাইব্রয়েড টিউমারে সত্য বলেএটা বারবার পরীক্ষিত হয়েছে। সাদা স্রাবে বলুন, জরায়ুর রক্তস্রাবে বলুন, দীর্ঘস্থায়ী মাসিক এবং জরায়ুর স্থানচ্যুতিতে ইত্যাদিতে খুবই উপকারী ঔষধ। এটি জরায়ুর মুখ শক্ত হয়ে যায়, এর সঙ্গে চাপ চাপ রক্ত থাকলে এই ঔষধটি অবধারিত ঔষধ রূপে পরিগণিত হয়।
ট্যাবেকাম (Tabacum)
তামাক পাতা থেকে তৈরি এই ঔষধটি ঠিক ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারলেই সাংঘাতিক রকমের বমনেচ্ছা ও বমিতে মৃত্যু পথযাত্রী রোগীকে আরোগ্য করা যায়। এর সঙ্গে থাকে মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরা, হঠাৎ প্রচুর ঘাম দিয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে মরণাপন্ন হওয়া ইত্যাদির।
সমুদ্র যাত্রায় জাহাজে বমি, বমনেচ্ছা, মাথা ঘোরানোর উপযোগী ঔষধ ট্যাবেকাম। অর্থাৎ অতিরিক্ত উত্তেজনা থেকে রোগের উৎপত্তি। দীর্ঘ দিন ধরে কেউ যদি মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে এবং মরণাপন্ন অবস্থা সৃষ্টি হয় ওই রোগীকে বাঁচিয়ে দেবে ট্যাবেকাম।
ক্যালি আয়োড (Kali Iod)
ক্যালিগ্রুপের সব গুলোই ঔষধ শীতকাতর একমাত্র ক্যালি আয়োড ছাড়া। এই গ্রুপের অন্য লক্ষণগুলো বর্তমান থাকলে রোগ যাই হোক না কেন ক্যালি আয়োড নির্বাচন করলে রোগী ভালো হয়ে যায়।
অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে হচ্ছে প্রাতঃকালীন বৃদ্ধি চারটা থেকে পাঁচটা উপসর্গের বৃদ্ধি, সুতার মত শ্লেষ্মা নির্গমন, নাক দিয়ে পানি পরা, সর্দি-কাশিতে খুবই উপকারী ঔষধ।
যদি সেই সঙ্গে সবুজ বর্ণের এবং লবণাক্ত শক্ত শক্ত বা জলীয় শ্লেষ্মা নাক মুখ দিয়ে বের হতে থাকে তাহলে দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। যে কোনো দীর্ঘ কালীন এলার্জিতে উচ্চ শক্তি দিলে উপকার হয়।

বিউফো (Bufo)
বিউফো মৃগী রোগের অন্যতম ঔষধ।ল্যাকেসিসের মত রাত্রে ঘুমের মধ্যে মৃগী রোগের আক্রমণ হয়। সাধারণত এ রোগী অল্প বয়সে বৃদ্ধের মত দেখা যায়। অল্প বয়সে বিকৃত যৌন চেতনার উদ্ভব হয়।
তার জন্য সে নির্জনতা খুঁজে, হস্তমৈথুন করার জন্য এবং এ থেকে শুরু হয় নার্ভের দুর্বলতা,অন্যমনস্ক, স্মৃতিশক্তির দুর্বল, ধাতু দুর্বল এমনকি ধ্বজভঙ্গ রোগ।
ক্যালেডিয়াম সেক(Caladium Seg)
মেয়েদের (vagina,valva)চুলকানিতে অত্যন্ত উপকারী ঔষধ। পুরুষদেরও পেনিসে চুলকানি আছে, অন্ডকোষের শক্ত হয়ে যায়। একটা মূল্যবান লক্ষণ আছে তার ঘামে মাছি আকর্ষণ করে ঘামটা মিষ্টি হয়। পাকস্থলী বা অন্ত্রের( intestinal)ক্যান্সারে যদি কাল রংঙের পিচের মত রক্ত বমি হয় তাহলে ক্যাডমিয়াম খুবই মূল্যবান একটি ঔষধ।
ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম(Uranium Nitricum)
ইউরোনিয়াম ডায়াবেটিস রোগের প্রয়োজনীয় একটি ঔষধ। যদি দেখা যায় রোগী ভীষণ ভাবে জীর্ণশীর্ণ হয়ে যাচ্ছে অথচ প্রচন্ড ক্ষিধে এবং খেলেই পেটে গ্যাস হচ্ছে। প্রস্রাব পেলেই দাঁড়াতে পারে না। মনে করলেই প্রস্রাব এর বেগ দেখা দেয়।
এর সাথে যদি ধ্বজভঙ্গ (impotence) দেখা যায় তাহলে প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলোর মধ্যে এটা ডায়াবেটিসের প্রথম সারির ঔষধ বলে গণ্য হবে।
এক্স-রে (X-ray)
বারবার X-ray করার ফলে যদি চামড়ায় চুলকানি, একজিমা দেখা দেয় এবং ক্যান্সার, এ X – Radiation প্রয়োগ করে কোন ফল না হলে, যন্ত্রণা কমাতে X-ray মূল্যবান একটি ঔষধ।
ফ্লোরিক এসিড (Fluoric Acid)
বেড সোরে, ভেরিকোস ভেইন এবং যেকোন ঘায়ের খুবই উপকারী ঔষধ।ঘায়ের যন্ত্রনা থাকে প্রচণ্ড, আলসার হওয়ার প্রবণতা থাকে, যন্ত্রণা গরমে বৃদ্ধি পায় এবং ঠাণ্ডা প্রয়োগে আরাম হয়।
ফ্লোরিক এসিডের বৈশিষ্ট্য রোগী ভীষণ ভাবে কোন রকমের গরম সহ্য করতে পারে না। এমনকি গরম পানিয়ে তার উদরাময় হতে দেখা যায়।
পরিশেষে বলতে চাই
হোমিওপ্যাথি ঔষধ এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এবং সারা জীবন ঔষধ খেয়ে যেতে হয় না। প্রয়োজন শুধু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা। যাতে আপনি আপনার রোগের জন্য সর্বোত্তম চিকিৎসা পান।
‘হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিভাবে কাজ করে’এই ব্লগ যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করবেন এবং নিয়মিত আরো বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেলগুলো পেতে হলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। ধৈর্য ধরে এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Resources:
প্রয়োজনে নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন-
সিটি হোমিও
রূপায়ন মিলেনিয়াম স্কয়ার,দোকান নং-116
( গ্রাউন্ড ফ্লোর) -70, 70/Aপ্রগতি শরণি,
উত্তর বাড্ডা, ঢাকা 1212,বাংলাদেশ।
01736181642
1 thought on “হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিভাবে কাজ করে(2025)”
Comments are closed.