প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর সমস্যার একটি রোগী কিভাবে সুস্থ হয়েছিল, আজকে আমার ব্লগে তা নিয়ে আলোচনা করব চলুন আলোচনা শুরু করা যাক –
ভূমিকা: প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষদের মূত্রনালীর চারপাশে অবস্থিত একটি ছোট, বাদামী-ধূসর গ্রন্থি যা প্রায় আখরোটের আকারের। প্রোস্টেটের প্রধান কাজ হল বীর্য তৈরিতে সাহায্য করা, যা শুক্রাণু বহন করে।প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যাগুলি সাধারণত প্রস্রাবের সমস্যার কারণ হয়।
রোগীর কথা –
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর সমস্যা নিয়ে একটি রোগী আসলো।রোগী এসে বলল ডাক্তার, আপনারা কি প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর রোগের চিকিৎসা করেন? রোগীর সাথে ছিল অনেকগুলো টেস্ট।
রোগীর সমস্যা –
ওখানে যা দেখা গেল সেটা ছিল -প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা , কিডনির সমস্যা, কিডনিতে পাথর হয়েছিল এবং IBS এর সমস্যা। কিডনির সমস্যায় ব্যথা করত,অনেক সময় ব্যথার জন্য বমি হতো।
রোগী বলল – প্রস্রাব ধীরে ধীরে আসে,অনেক কুথ দেওয়ার পরে প্রস্তাব আসে,মাঝে মাঝে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, রাত্রে প্রচুর প্রস্রাব হয় এবং বারে বারে উঠতে হয়। পিঠে ব্যথা আছে তবে তা প্রসবের পরে কমে যায়।প্রস্রাবে গাঢ় লাল বর্ণের তলানি পরে।
রাত্রে আমার হার্টেও কম্পন বেড়ে যায় কিছুতেই বামদিকে ফিরে শুতে পারি না।পানি পিপাসা নাই তবুও গলাটা শুকিয়ে যায়। ঠান্ডা পানি খেতে পারিনা। খাদ্য বস্তুসমূহ নাক দিয়ে উঠে আসে। আমার সব যন্ত্রণা বেশির ভাগ বৃদ্ধি হয় বিকেল চারটা থেকে আটটা পর্যন্ত এবং আমার যত যন্ত্রণা আছে, ডান পাশেই বেশি।
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর সমস্যা
রোগী দেখতে ছিল – শরীরের উপরের অংশ চিকন নিচের অংশ তুলনামূলক ভাবে মোটা। কুচকানো কপাল বিরক্ত মুখমণ্ডল।
জিজ্ঞাসা করছিল অনেক জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েছি ভালো তো হলোনা। আপনার এখানে কি ভালো হবে ? আমি বললাম,আপনি যখন এলোপ্যাথিক ডাক্তারদের কাছে চিকিৎসা করেছিলেন তখন কি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ভালো কি হবে ?
আমার এখানে এসে কেন এই জিজ্ঞাসা? আমি যা যা প্রশ্ন করি তার সঠিক উত্তর দেন,পরে দেখছি আপনার রোগ ভালো হবে কি না।
আপনার গরমের দিন ভালো লাগে না শীতের দিন ভালো লাগে।
রোগীর লক্ষণ যা পাই
রোগী বললো আমি শীতকাতর তাই আমি ঠান্ডা খাবার পছন্দ করিনা। রোগীর মধ্যে যা পেলাম – আমার গরম গরম খাবার পছন্দ ,প্রচুর ক্ষুধা, একটুতেই পেট ভরে যায়, খাবার প্রতি লোভটা আমার বরাবরই বেশি, মিষ্টি দেখলে পাগল হয়ে যাই কিন্তু পেটে সহ্য হয় না।
দুধ খেতে পারি না, সহ্য হয় না।পেটে প্রচুর গ্যাস,বায়ু যায় প্রচুর তবে নিচে দিয়ে বেরোলে একটু আরাম পাই, আমার যত লক্ষণ আছে বিকেল চারটা থেকে রাত্রে আটটা পর্যন্ত থাকে।অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি ভালো হয়না। আমি একটু ভীতু প্রকৃতির।
বাসায় আমি রাজার হালে চলি, আমার কথার উপর কেউ কথা বলতে পারে না কিন্তু বাহিরে গেলে আমি বেড়ালের মত হয়ে যাই।এত ভয় পাই যে, কারো সাথে কথা বলতেও ভয় পাই। আমার বয়স কম, তারপরও দেখেন টাক পড়েছে, চুলগুলো পর্যন্ত পেকে গেছে।দেখতে বয়স্ক মানুষের মতো দেখায়।
Read More:হোমিওপ্যাথিতে সিফিলিস মায়াজম
হোমিওপ্যাথিতে বয়স কমানোর এমন কোনো ঔষুধ আছে?
ছোট্ট কাল থেকে এ পর্যন্ত কোন বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন?
জি – ছোটকালে আমার নিউমোনিয়া হয়েছিল, কয়েক বছর আগে জন্ডিস হয়েছিল।
বংশে কোন বড় ধরনের রোগ আছে ?
আমার দাদার – শ্বাসকষ্ট, মার – বাত ব্যথা, বাবার – প্রোস্টেট এর সমস্যা ছিল।
আপনার কিসে বাড়ে ও কিসের কমে?
বৃদ্ধি: ডানদিকে, ডান দিক থেকে বাম দিকে উপর থেকে নিচের দিকে, বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত, গরমে অথবা গরম ঘরে, উত্তপ্ত বাতাসে, বিছানার গরমে।
উপশম: নড়াচড়ায়, মধ্য রাত্রির পরে , গরম খাবার ও পানীয়ে, ঠান্ডা লাগালে ও অনাচ্ছাদিত অবস্থায়।
আমরা রোগের চিকিৎসা করিনা রোগীর চিকিৎসা করি। রোগ কি তা আমাদের জানা দরকার নেই। আমরা শুধু রোগীটা কোন ঔষধের সেটাই দেখব।
মাথার জন্য এক ঔষধ, পায়ের জন্য আরেক ঔষধ, এভাবে না দেখে একটিমাত্র ঔষধ নির্বাচন করবো তাহলে মন্ত্রের মতো কাজ হবে। দেখেন এখানে প্রতিটা লক্ষণ একটা নির্দিষ্ট ঔষধকে নির্দেশ করছে। ঔষধটা হলো – লাইকোপোডিয়াম/Lycopodium Clavatum.
লাইকোপোডিয়াম (Lycopodium) হল ক্লাবমোসের একটি প্রজাতি, যা লাইকোপোডিয়াসি পরিবারে গ্রাউন্ড পাইন বা ক্রিপিং সিডার নামেও পরিচিত। এটি একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা উত্তর গোলার্ধের বনভূমিতে জন্মে।
লাইকোপোডিয়ামের খোঁচা, স্কোরোফিলোজাস শাখাগুলি মাটির উপর দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে বা তার নিচে ক্র্যাভিনগুলি তৈরি করে। উদ্ভিদের ছোট, স্কেল-লাইক পাতা থাকে এবং শাখার ডগায় স্পোরাঙ্গিয়া উৎপন্ন করে।
Resource:
1 thought on “প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর সমস্যা”
Comments are closed.