সংক্ষিপ্ত ভাবে সালফার ও থুজা এবং গ্লোনোইন ঔষধ পড়ে মনে রাখা। বর্তমান যুগে পেটেন্ট ঔষুধের উপর ডাক্তাররা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। কারণ তারা প্রয়োজনীয় ঔষুধগুলো পড়তে নারাজ। ক্ষুধা লাগলে যেমন খাবার দরকার পড়ে তেমনি অসুস্থ হলে ঔষধের দরকার পড়ে। হোমিও ডাক্তারদের উচিত প্রয়োজনীয় ঔষুধগুলো বারবার পড়ে মনে রাখা।
কিন্তু মেটেরিয়া মেডিকার ঔষধগুলো এত বড় করে লেখা যে, তাদের পড়তে অলস লাগে।
অথচ হোমিও চিকিৎসার মূল অস্ত্র হলো মেটেরিয়া মেডিকা আয়ত্ত করা এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলো মনে রাখা।
আমরা রোগের চিকিৎসা করি না রোগীর চিকিৎসা করি । আমাদের দরকার সাইন এবং সিমটম।
নিচের ঔষধগুলো বার বার পড়লে আমার মনে হয় না মেটেরিয়া মেডিকা পড়তে অলস লাগবে। তাতে করে আমরা খুব তাড়াতাড়ি করে রোগী দেখতে পারবো।
সালফার/Sulphur গন্ধক থেকে তৈরি।

- কাতরতা – গরম কাতর, কিন্তু গরম সহ্য করতে পারে না।
- মন – ভুলোমন, অত্যন্ত স্বার্থপর, ধর্ম বিষয়ে বিমর্ষতা, অলস, নোংরা, অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকে। সামান্য জিনিসকে মহা মূল্যবান ভাবে।
- কারণ – চর্মরোগ চাপা পড়া। গ্ল্যান্ড এর ওষুধ অসুখ।
- মায়াজম – প্রধানত এন্টিসোরিক, চারটা মায়াজমই কভার করে।
সালফার সম্পর্কে মনে রাখতে হলে দুটি কথা মনে রাখতে হবে। এক লাল এবং জ্বালা।
লাল হচ্ছে তার মিউকাস মেমব্রেন এর যতগুলো জায়গা আছে সব জায়গা থাকবে লাল। যেমন ঠোট চোখ নাকের ছিদ্র এবং রেকটামের জায়গা।
জ্বালা – হাতের তলা, পায়ের তলা,মাথার তালু – বিশেষ করে রাত্রে শোয়ার পরে পা জ্বালা করে।
উত্তাপের ঝলকা থাকার পরেও গোসলের অনীহা। চর্ম,চুল শুষ্ক ও কাঠিন্যতা। বেলা ১১টায় প্রচুর ক্ষুধা লাগা। সম্পূর্ণ ক্ষুধা লুপ অথবা প্রচুর ক্ষুধা।
পানি খায় প্রচুর খাবার কম খায়। টেস্ট – তিতা। পানি ব্যতীত। কিছুতেই বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।
মাথা ব্যথার সময় মাথা গরম থাকে অথচ পা দিনের বেলায় ঠান্ডা থাকে। রাত্রে পা জ্বালার জন্য লেপের বাহিরে রাখে।
খাদ্য –পছন্দ মিষ্টি,লবণ ও চর্বি। অপছন্দ – দুধ কারণ তা তার সহ্য হয় না।
বৃদ্ধি – দাঁড়িয়ে থাকলে, বিছানার গরমে, গোসলে, কোন অঙ্গ, ধৌত করলে, প্রাতকালে, বেলা ১১ টায়, রাত্রিকালে, মদ্যপানে এবং নির্দিষ্ট সময়ে।
উপশম – শুষ্ক, গরম আবহাওয়া।
থুজা অক্সিডেন্টালিস /Thuja Occidentalis
- উৎস উদ্ভিদ।
- মায়াজম – প্রধানত এন্টিসাইকোটিক। তিনটা মায়াজম কভার করে। সোরিক, সাইকোটিক এবং সিফিলিটিক।
- কাতরতা – শীতকাতর।
মন – বদ্ধমূল ধারণা। রোগী মনে করে তার পাশে অপরিচিত কেউ শুয়ে আছে।আত্মা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
পেটে জীবন্ত কিছুর নড়াচড়া। উত্তেজনা (আনন্দ ও শোক জনিত), প্রতিবাদ অসহ্য, লোকসঙ্গ অনিচ্ছা ইচ্ছা। সন্দেহ প্রবণ, মা বা স্বামীর ব্যাপারে কলহপ্রিয়।
কারণ- টীকা, গনোরিয়ার চাপা পড়া, যৌন অপব্যবহার , সূর্যাঘাত, সালফার, পারদ, চা, কফি, মিষ্টি, পেঁয়াজ, বংশে বাত, ক্যান্সার,
হাঁপানি ইত্যাদি ইতিহাস পাওয়া গেলে। ইচ্ছা ঠান্ডা পানীয় লবণ, ঠান্ডা খাদ্য ও ঠান্ডা পানি।
Read More:ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা ও প্রতিরোধ
অনিচ্ছা – মাংস, আলু,পিয়াজ। মাথা ছাড়া শরীরে ঘাম, ঘুমের পর ঘাম, স্বপ্ন বহুল নিদ্রা, প্রচুর বায়ু। স্পর্শ কাতর।
বৃদ্ধি – বর্ষাকালে, বর্ষা আবহাওয়ায়, সমুদ্র পাড়ে গেলে। ভিজা ঠান্ডায়, রাত্রে, বিছানার গরমে, ভোর ৩টায়, বিকাল ৩টায়।
ঋতুস্রাবের সময়, সহবাসে, বিশেষ করে পুরুষদের, টিকা গ্রহণের পর, নাস্তা খাবার পর, বাত ব্যাথা বৃত্তি শুলে, বর্ষাকালে জল, জলাধারে।
উপশম – গরমে পায়ের উপর আড়াআড়ি ভাবে রাখলে শুষ্ক আবহাওয়ায়।
গ্লোনোইন/Glonoine

উৎস – রাসায়নিক। Glonoine রজ:রোধ অথবা রজঃ সম্পর্কিত গোলযোগের জন্য মাথা যন্ত্রণার উৎকৃষ্ট ঔষধ।
মায়াজম – টিউবারকুলার মায়াজম।
ক্রিয়া – মস্তিষ্ক, ভ্যাসোমোটরস, রক্ত সঞ্চালন, মাথা, হার্ট, ম্যাসটরয়েড।
রোগ – হাই প্রেসার, মস্তিষ্ক ও হৃদপিন্ডে রক্তাধিক্য, সমগ্র শরীরের নারী স্পন্দনের ন্যায় অনুভূতি – যা হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত বর্ধিত হয়।
সাইয়েটিকা তৎসহ অঙ্গের শীতলতা ও শিথিল ভাব, সামুদ্রিক অসুস্থতা। রক্তাধিক্য জনিত কারণে মাথার যন্ত্রণা। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম লাগানোর ফলে মস্তিষ্কের রক্তাধিক্য।
মন – খিটখিটে, কিছুতেই বুঝতে পারে না সে কোথায় আছে, হতভম্ব।
মাথা – তাপে বৃদ্ধি (আলো) মাথা ভাড়ী বলে মনে হয় – বালিশে রাখতে পারেনা। মাথা বেদনা দপ্ দপ কর।
মাথা খোলা রাখলে উপশম, মাথা ও মুখমন্ডলে অ্যানজিওপ্লাস্টিক নিউরালজিয়া। সোজা ভাবে থাকলে মাথা ঘোরে,মাথাটা প্রচুর বড় হয়েছে বলে মনে হয় এই জাতীয় অনুভূতি।
যেন মাথার খুলিটা মস্তিষ্কের তুলনায় অত্যন্ত ছোট বলে মনে হয়। মাথা ব্যথা সূর্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
মাথায় আঘাত লাগার মত অনুভূতি। তা স্পন্দনের সাথে সমান ভাবে চলে। মাসিকের পরিবর্তে মাথা যন্ত্রণা। মেনিনজাইটিস।
চোখ – অর্ধেক দেখে (আলো ও ছায়া) আগুনের ঝলকানি দেখে চোখের সামনে।
কান – দপ্ দপ কর হৃদস্পন্দন এর প্রতিশব্দ কানে শোনা যায়। কানে পূর্ণতার অনুভূতি।
মুখ – মুখ রক্তিম আভা উত্তপ্ত কালো বর্ণ। ফ্যাকাশে ঘাম যুক্ত – নাকের গোড়ায় বেদনা -মুখেও।
গলা – পূর্ণতার অনুভূতি তাই জামার কলার খুলে রাখতে হয়। কানের নিম্নাংশে গলা ফুলে যায় ও বন্ধ হয়ে আসে।
পাকস্থলী – শূল বেদনা, রক্তস্বল্পতা- অস্বাভাবিক প্রকৃতির ক্ষুধা।
উদর – কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ – মল ত্যাগের আগে-পরে চিমটি কাটে অনুভূতি।
স্ত্রী রোগ – ঋতুস্রাব দেরি করে অথবা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। তৎসহ মাথায় রক্তাধিক্য। রজঃলোপ কালে মুখমণ্ডল রক্তিম আভা।
হৃদপিণ্ড – ক্লান্তি উৎপাদক কাজ। পাখা ঝাপটানোর মত মত শব্দ।হৃৎকম্প তৎসহ শ্বাসকষ্ট ,পরিশ্রম করতে পারে না, এমনকি পাহাড়ের উপরে উঠলেও শ্বাসকষ্ট এবং হৃদপিন্ডের রক্তাধিক্য এবং অবসন্নতা দেখা দেয়। সারা শরীর আংগুলের ডগা পর্যন্ত দপ্দপানি।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – সমগ্র শরীর টেনে ধরার মতো বেদনা এবং চুলকানি।
বৃদ্ধি – সূর্যকিরণে, খোলা বাতাসে, আগুনের কাছে থেকে থেকে কাজ করলে, সামনের দিকে ঝুঁকলে, ঝাকুনি, মাথার চুল কাটলে, শুয়ে পড়লে, পীচ ফল খেলে। উত্তেজক বস্তুতে, সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত, বামদিকে।
উপশম – মাথা খোলা রাখলে, ঠান্ডা পানিতে।
Resources:
- https://www.webmd.com/vitamins/ai/ingredientmono-1117/thuja
1 thought on “সংক্ষিপ্ত ভাবে সালফার ও থুজা”
Comments are closed.