হোমিওপ্যাথিতে সিফিলিস মায়াজম[২০২৫] – আসুন প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক সিফিলিসের রোগীটির সম্পর্কে। সিফিলিটিক রোগীকে তার শারীরিক অবয়ব এক নজরে দেখে এবং অতি অল্প সময় পরিদর্শন করেই আমরা বুঝে নিতে পারি যে, রোগীটি সিফিলিসের।
সিফিলিস মায়াজমের বা রোগের একজন রোগীকে চিনতে হলে প্রথমেই আপনার চোখ যাবে তা মুখমন্ডলের দিকে এবং দেখবেন তার মুখমন্ডলটি এমনই পিচ্ছিল ও চকচকে যে মখমন্ডলটিতে যেন তৈল মাখান আছে।
সিফিলিসের ভ্রু, চোখের পাতা ইত্যাদি স্থানের চুলগুলি উঠে যায় এবং কোন প্রকার তরুণ রোগ ভোগের পর যাদের চুলগুলি উঠে যায় তাদের শরীরে সিফিলিস মায়াজম আছেই আছে।
ফলে বেশী বয়স পর্যন্ত শিশুদের মাথার মধ্যস্থলে এ ফাঁকটি থেকে যায়, অস্থি বর্ধিত হয়না এবং মাথায় প্রচুর ঘাম হয়। মস্তিষ্কে পানি জমলে মাথাটি যেমন বড় দেখায় সিফিলিটিক শিশুদের মাথাও সেইরূপ বড় দেখায়।
Read More:সিফিলিস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
সিফিলিসের কান দুটি দীর্ঘাকৃতির এবং সেগুলি প্রায়ই পাকে ও তা হতে দুর্গন্ধ রস বা পূঁজ স্রাব নির্গত হয়। রোগীর সমান্য ঠান্ডা, সর্দি বা কোন প্রকার উদ্ভেদ জাতীয় রোগ লক্ষণ যথাঃ হাম, বসন্ত ইত্যাদি দেখা দিলে তার সাথে কানে পূঁজ জন্মে।
তার নাকের দিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, তার নাকটি উচ্চতার দিক থেকে কম। আমরা জানি, শরীরের গ্ল্যাল্ডসমূহের বৃদ্ধি, যাবতীয় তন্তু সমূহের ক্ষত, পচন ও দুর্গন্ধ, ক্ষত ও পচন সত্ত্বেও তাতে যন্ত্রণা ও চুলকানির অভাব ইত্যাদি সবই হচ্ছে সিফিলিসের বৈশিষ্ট্য।
মুখ গহ্বরের যাবতীয় ঘা, দাতগুলি উঁচুনিচু, ক্ষয়প্রাপ্ত ও করাতের ন্যায় আকার বিশিষ্ট, মাঢ়ীতে স্ফোটক ও পূঁজ জমা, গোড়া আলগা ও দুর্গন্ধ লালাস্রাব, দাতের ধারগুলিতে দাতের ছাপ, জিহ্বা ভিজা।
অর্থাৎ রসাল অথচ প্রচুর পিপাসা, টনসির বৃদ্ধি, গলক্ষত ও গাল গলার গ্ল্যান্ডগুলির স্ফীতি ইত্যাদি সবই সিফিলিটিক রোগীর বৈশিষ্ট্য। সূতার মত লম্বা চটচটে লালাস্রাব, মুখে ধাতু দ্রব্যের বিশেষ করে তামাটে স্বাদ (Taste) সিফিলিসের বৈশিষ্ট্য।
সিফিলিস মায়াজম এর বৈশিষ্ট্য কি?
সিফিলিস মায়াজম এমনই একটি মায়াজম বা রোগ যে, তার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার ইচ্ছা শক্তিটি একেবারেই বিকৃত হয়ে যায় এবং তার মনের এই বিকৃত ইচ্ছা শক্তিটি তার উদর লক্ষণেও প্রতিফলিত হয়, যার ফলে কোন নির্দিষ্ট খাদ্য বস্তুতে ইচ্ছা অনিচ্ছা সম্পর্কিত লক্ষণ যেটা সাধারণত সোরা ও সাইকোসিস বলতে পারে সিফিলিস তা বলতে পারেনা।
মানসিক নৈরাশ্য ও বিষন্নতা, আত্মহত্যা প্রবৃতি, প্রচুর ঘর্ম ও যাবতীয় রোগ লক্ষণেরই রাত্রে বৃদ্ধি সিফিলিসের বৈশিষ্ট্য। সিফিলিসের রোগীকে চিনতে হলে পূর্ব থেকেই তার চকচকে পিচ্ছিল (Greasy or oily)মুখমন্ডল মানসিক নৈরাশ্য ও আত্মহত্যা প্রবৃতি, ঘর্মের প্রচুরতা, ব্যথা ও চুলকানিবিহীন ক্ষত ও দুর্গন্ধ থাকবেই মনে রাখতে হবে।
সিফিলিস মায়াজম এর লক্ষণ
এছাড়া রোগীর শারীরিক লক্ষণ বা বস্তুগত লক্ষণগুলি দেখেও আমরা বুঝতে পারি যে রোগীটি সিফিলিসের। রোগীর শারীরিক লক্ষণগুলি হচ্ছে পচনযুক্ত যাবতীয় রোগ যেমন: দুর্গন্ধ পূঁজ ও রস নি:সরণকারী চর্ম রোগ, চর্মের উপরে তামাটে বর্ণের চুলকানীবিহীন উদ্ভেদ।
দুর্গন্ধ যুক্ত মাসিক ও প্রদর স্রাব, নাক ও কানের ক্ষত ও দুর্গন্ধ স্রাব, প্রস্রাব যন্ত্রের ক্ষত, গলক্ষত, মেরুমজ্জার ক্ষত, মুখে ক্ষত ও দুর্গন্ধ লালাস্রাব, রমণীদের বারবার গর্ভস্রাব হওয়া, মদ্যপানের প্রবল নেশা।
(Gumma- a small soft swelling which is characteristic of the late stages of syphilis and occurs in the connective tissue of the liver, brain, testes, and heart., soft non-cancerous growths.,a characteristic tissue nodule found in the tertiary stage of syphilis.),
গুমা (Gumma- a small soft swelling which is characteristic of the late stages of syphilis and occurs in the connective tissue of the liver, brain, testes, and heart., soft non-cancerous growths., a characteristic tissue nodule found in the tertiary stage of syphilis.),
ম্যাকিয়ুল (Macula- any small discoloured spot or blemish on the skin, suc as a freckle), প্যাপিয়ুল (Papule- a small somewhat pointed elevation of the skin, usually inflammatory but nonsupporative.),পাসটিয়ুল (Pustule- A small blister or pimple on the skin containing pus.), Bleeding warts, Excoriation/Intertrigo, Chillblain, Frostbite, Sepsis, Crack picking skin),
হোমিওপ্যাথিতে সিফিলিস মায়াজম এর গ্ল্যান্ড
হোমিওপ্যাথিতে সিফিলিস মায়াজম যাবতীয় গ্ল্যান্ড সমূহের স্ফীতি ও পচন, উদরক্ষত, হাত, পা ও আঙ্গুল হাজা,কোন অঙ্গের অসাড়তা, অবসতা বা পক্ষাঘাত যেমনঃ মুখে পক্ষাঘাত, জিহ্বায় পক্ষাঘাত, চক্ষুপত্রে পক্ষাঘাত, হস্তপদে পক্ষাঘাত, উদর যন্ত্রের পক্ষাঘাত ইত্যাদি।
মনে রাখতে হবে মুখে পক্ষাঘাত হলে মুখ বেঁকে যায়, জিহ্বায় পক্ষাঘাত হলে কথা জড়িয়ে যায়, চক্ষুতে পক্ষাঘাত হলে চক্ষুপত্র ঝুলে পড়ে, হস্তপদের পক্ষাঘাত হলে হাত বা পা পড়ে যায়, উদর যন্ত্রের পক্ষাঘাত হলে প্রবল কোষ্ঠকাঠিন্য প্রকাশ পায়। রোগীর এই পক্ষাঘাত প্রথমে মানসিক তারপর দৈহিক।
আর তাই এই পক্ষাঘাতের কারণেই রোগী স্বায়বিক বেদনায় ভোগে, তার মধ্যে আক্ষেপ দেখা দেয়, মৃগী রোগ প্রকাশ পায় কিংবা স্বাভাবিক জ্ঞানবুদ্ধির বিকাশ না হওয়ায় বা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রোগী উম্মাদগ্রস্ত হয়ে যায়। স্ক্রফিউলা, সিউডোসোরা, রিকেট, ষ্ট্রুমা, ইত্যাদি।
Read More:টিউমার কিউর হোমিওপ্যাথিতে
এ ছাড়া হাড় বেদনা ও হাড়ের যাবতীয় রোগ যেমন: হাড়ের টিউমার (Bone tumor), হাড়ের ক্যানসার (Bone cancer), লম্বা হাড়সমূহের(Long bones)বাত, হাড়ের ক্ষয়, কুষ্ঠ (Leprosy), বার্জার’স ডিজিজ (Burger’s disease), সেপসিস (Sepsis), হার্টের দুর্বলতাহেতু রক্ত চলাচলে বিশৃঙ্খলা ও নানা প্রকার রোগ ইত্যাদি সবই সিফিলিসের লক্ষণ।
Resources:
3 thoughts on “হোমিওপ্যাথিতে সিফিলিস মায়াজম[২০২৫]”
Comments are closed.