চিকিৎসায় মাত্রা বৃদ্ধির কুফল(২০২৫)[অনুচ্ছেদ: ৬০]প্রথমে জেনে নেই কি কি টপিক নিয়ে আলোচনা করব-
- অ্যান্টিপ্যাথিক উপশমদায়ক চিকিৎসার ভয়াবহ পরিণতি: [পাদটীকা: ৬৬]
- উপশমের জন্য মাত্রা কি স্থায়ী হয়?
- মাত্রা বৃদ্ধির যন্ত্রণা

‘If these ill-effects are produced, as may very naturally be expected from the antipathic employment of medicines, the ordinary physician imagines he can get over the difficulty by giving, at each renewed aggravation, a stronger dose of the remedy, whereby an equally transient
suppression is effected; and as there then is a still greater necessity for giving ever-increasing quantities of the palliative there ensues either another more serious disease or frequently incurability , even danger to life and death itself, but never a cure of a disease of considerable or of long standing.’
অনুবাদ: সাধারণ চিকিৎসকগণ মনে করেন যে এই সকল সমস্যা দেখা দিলে, যা বিপরীত ধর্মী ঔষধ প্রয়োগে প্রাকৃতিক ভাবেই উৎপন্ন হয়, তা রোগ বৃদ্ধির প্রতিবারে ঔষধের মাত্রা পরিমাণে আরও বেশী বাড়িয়ে দিলে দূর হবে। অথচ এর দ্বারা রোগটি একই ভাবে ক্ষণকালের জন্য কেবলই চাপা থাকে।
এইভাবে ক্রমেই ঔষধের মাত্রা আরও বেশী বাড়িয়ে উপশম দেওয়ার প্রয়োজন হতে থাকে যার ফলে হয় আর একটি অধিকতর কঠিন রোগের সৃষ্টি হয় নয়তো প্রায়ই রোগটি আরোগ্যের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে, জীবন বিপদাপন্ন হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিংবা দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগকে এর দ্বারা কখনোই আরোগ্য হতে দেখা যায় না।
অ্যান্টিপ্যাথিক উপশমদায়ক চিকিৎসার ভয়াবহ পরিণতি: [পাদটীকা: ৬৬]
‘All usual palliatives given for the suffering of the sick have (as is seen here) as after effects an increase of the same suffering
and the older physicians had to repeat them in ever stronger doses in order to achieve a similar modification, which, however, was never permanent and never sufficient to prevent an increased recurrence of the ailment.’
উপশমের জন্য মাত্রা কি স্থায়ী হয়?
অনুবাদ: রোগীর উপশমের জন্য প্রয়োগকৃত দ্রুত উপশমদায়ক প্রচলিত প্রতিটি ঔষধেরই প্রতিক্রিয়ায় রোগটির বৃদ্ধি (যেমন এখানে দেখা যাচ্ছে) ঘটে থাকে এবং পুরাতন পন্থী চিকিৎসকগণ ঐরূপ বৃদ্ধি উপশমের জন্য ক্রমাগত বৃহত্তর মাত্রায় ঐ সকল ঔধেরই পুন: প্রয়োগ করে থাকেন।
মাত্রা- তারপরও কখনো উহা স্থায়ী হয় না এবং বর্ধিত রোগের পুনরাবর্তন ঠেকাতে তা যথেষ্ট হয় না। অর্থাৎ, আশু উপশমকারী সকল চলতি ঔষধেরই প্রতিক্রিয়ায় আসে সেই অসুখের বৃদ্ধি এবং প্রাচীনপন্থী চিকিৎসকগণ আর একটু উপশমের জন্য ক্রমবর্ধমান মাত্রায় সেই ঔষধ পুনর্প্রােয়োগ করে থাকেন।
তাতে স্থায়ী উপকার তো হয়ই না রোগেরবৃদ্ধিকেও এর দ্বারা নিবারণ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু পঁচিশ বৎসর পূর্বে ব্যবস্থাপত্রে নির্বোধের ন্যায় বিভিন্ন ঔষধের একত্র মিশাবার পদ্ধতির বিরুদ্ধে ব্রুসো আলোচনা চালিয়ে ফ্রান্সে তাঁর প্রচলন বন্ধ করে দিয়ে (সে জন্য মানবজাতি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ)

তথাকথিত মাত্রা বৃদ্ধির কুফল শারীর বিজ্ঞান সম্মত তাঁর নিজস্ব এক পদ্ধতি (হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতি তখন চালু থাকলেও সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে) প্রবর্তন করেন। এই পদ্ধতিতে যেমন সকল রোগের পুনরাবির্ভাব সাফল্যের সঙ্গে হ্রাস করা কিংবা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা সম্ভব হতো তেমনি তা মানুষের সকল প্রকার রোগে প্রয়োগ করা চলতো।
কিন্তু তখনকার প্রচলিত উপশমদায়ক ঔষধসমূহের দ্বারা এই প্রকার প্রয়োজন সিদ্ধ হওয়া সম্ভব ছিলো না। মৃদু ও নির্দোষ ঔষধ দিয়ে রোগ আরোগ্য করে রোগীকে সুস্থ করতে অসমর্থ হয়ে ব্রুসো রোগীর যডন্ত্রণা লাঘব করার উদ্দেশ্যে তাঁর জীবনের ক্ষতি সত্ত্বেও এবং পরিণামে মৃত্যুকে আহ্বান করেও এক সহজতর উপায় গ্রহণ করেছিলেন এবং দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর সমসাময়িকগণও তা যথেষ্ট বলে মনে করেছিলেন।
এই চিকিৎসায় যে পরিমাণে রোগীর দেহে শক্তি অবশিষ্ট থাকতো সেই পরিমাণে রোগীর রোগ ধরা হতো এবং সেই অনুপাতে রোগী যন্ত্রণা অনুভব করতো। রোগীর কাতরতা, আর্তনাদ ও সাহায্যার্থে উচ্চৈস্বরে চিৎকার সত্ত্বেও কেবল অবসন্ন এবং শক্তিকে ক্রমশ হ্রাস করতে চাইতেন।
সেই জন্য প্রায়ই তিনি রোগীর রক্তমোক্ষণ করতেন। সেই উদ্দেশ্যে আরও বেশী জোঁক ধরিয়ে ও বাটি বসিয়ে জীবন রক্ষক তরল পদার্থটিকে আরও বেশী শোষণ করা হতো (কারণ, তাঁর মতে নির্দোষ, অপূরণীয় রক্তই প্রায় সকল প্রকার রোগের মূল কারণ)।
মাত্রা বৃদ্ধির যন্ত্রণা
শোষণের অনুপাতে দুর্বল হয়ে পড়ায় রোগী আর বেশী রোগ যন্ত্রণা অনুভব করতো না কিংবা রোগের বৃদ্ধি তার তীব্র প্রতিবাদ বা আকার ইঙ্গিতে প্রকাশ পেত না। দুর্বলতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে অধিকতর শান্ত দেখা যেত।
দর্শকগণ রোগীর প্রতীয়মান উন্নতি দেখে খুশী হতেন আবার যন্ত্রণার পুনরাবির্ভাব ঘটলে তা খেঁচুনি, দম বন্ধ হওয়া, মাত্রা- যন্ত্রণা ভীতি যাই হোক না সেই চিকিৎসা ব্যবস্থার পূর্ণ প্রয়োগ করা হতো।তাঁরা দেখাতেন কত সুন্দরভাবে রোগীর রোগযন্ত্রণা প্রশমিত করেছেন।
ভবিষ্যতে আরো আরাম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তাঁরা দিতেন। দীর্ঘস্থায়ী রোগে রোগীর কিছু শক্তি অবশিষ্ট থাকলে তাকে খেতে দেওয়া হতো না, প্রায় অনশনে রাখা হতো, যার ফলে তার জীবনী শক্তিকে আরো সাফল্যের সাথে অবসন্ন করে তার অস্থির অবস্থাকে দমন করা হতো।
রক্ত মোক্ষমকারী জোঁকের ব্যবহার, প্রদাহ উৎপাদন, উঞ্চ গোসল, প্রভৃতি প্রকরণের পূর্ণপ্রয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপনের শক্তিও রোগীর আর তখন থাকতো না।
পুন:পুন: রক্তক্ষয় ও এ জন্য জীবনীশক্তির অবসাদহেতু মৃত্যু যে অবশ্যম্ভাবী সেদিকে রোগীর দৃষ্টি না পড়ে, কারণ তার সকল প্রকার বোধশক্তি পূর্বেই লোপ পেয়েছে। আর তার আত্মীয়স্বজন রোগীর শেষ অবস্থায়ও রক্তমোক্ষম, গরম জলে স্নান, প্রভৃতি দ্বারা উন্নতি হয়েছে।
এই আত্মবিশ্বাসে তার প্রকৃত অবস্থাটা বুঝতে পারে না এবং যখন দেখে রোগী শান্তভাবে এক অজানা লোকে চলে গেল তখন আশ্চর্যবোধ করে। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ তায়ালা জানেন রোগ শয্যায় রোগীর জন্য কোন উৎকৃষ্ট চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।
কারণ ছোট একটি ছুরির দ্বারা একটুখানি ক্ষত উৎপাদন করা এমন কিছু যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার নয়, আর গ্যাম অ্যারেবিক দ্রব – এই একটিমাত্র ঔষধই ব্রুসো পায় ব্যবহার করতেন। খেতেও যেমন মৃদু স্বাদবিশিষ্ট তার ক্রিয়াও তেমন কিছু দেখা যায় না।
জোঁকের কামড় তো তুচ্ছ, চিকিৎসক কর্তৃক রক্তমোক্ষম কার্যও শান্তভাবে করা হয়েছে, মৃদু গরম পানিতে গোসল তো আরামই দেয়। সুতরাং রোগটি শুরু হতেই মারাত্মক ছিলো সে জন্য চিকিৎসকের এতসব চেষ্টা সত্ত্বেও রোগী মারা গেল। এইভাবে আত্মীয় স্বজন বিশেষ কর পরলোকগত প্রিয়ের উত্তরাধিকারিগণ আপনাদিগকে শান্তনা দেন।
Resources: