হোমিওপ্যাথি ঔষধের সর্বোত্তম আরোগ্যের জন্য সবচেয়ে ক্ষুদ্র মাত্রা কোনটি? হ্যানিম্যান অর্গাননের ২৭৮ নম্বর সূত্রে বলেন
‘Here the question arises, what is this most suitable degree of minuteness for sure and gentle remedial effect; how small,in other words,must be the dose of each individual medicine, homoeopathically selectedfor a case of disease, to effect the best cure?’
অর্থাৎ এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, তাহলে নিশ্চিত ও নির্মল আরোগ্যের জন্য হোমিওপ্যাথি ঔষধের মাত্রার সর্বাপেক্ষা উপযোগী ক্ষুদ্রতমস্তর কোনটি?
অর্থাৎ কোন রোগে সর্বোত্তম আরোগ্যের জন্য হোমিওপ্যাথি মতে নির্বাচিত প্রতিটি ঔষধের সবচেয়ে উপযোগী ক্ষুদ্রমাত্রাটি কি?এ প্রশ্নের উত্তরও
উপরোক্ত ২৭৮ নম্বর সূত্রেই পাওয়া যায় যেখানে হ্যানিম্যান বলেন –
‘To solve this problem, and to determine for every particular medicine, what dose of it will suffice for homoeopathic therapeutic purposes and yet be so minute that the gentlest and most rapid cure may be thereby obtained – to solve this problem is, as may easily be conceived, not the work of theoretical speculation; not by fine-spun reasoning, not by specious sophistry can we expect to obtain the solution of this problem. It is just as impossible as to tabulate in advance all imaginable cases.’

অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উদ্দেশ্যে প্রতিটি ঔষধের কি পরিমাণ মাত্রা আরোগ্য সাধনের জন্য যথেষ্ট অথচ তা এতই ক্ষুদ্র যে, তার দ্বারা
সবচেয়ে আরামদায়ক এবং দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়,এ সমস্যার মীমাংসা কোন আনুমানিক মত, কোন কুট -তর্ক, কোন আপাত: মধুর
বাকচাতুর্যের দ্বারা আশা করা যায় না। সকল প্রকার কাল্পনিক রোগের একটি অগ্রীম তালিকা প্রস্তুত করা যেমন অসম্ভব এটিও তেমনই অসম্ভব।
হোমিওপ্যাথি ঔষধের ক্ষুদ্র মাত্রা এখানে হ্যানিম্যান কি বলেছেন ?
এখানে হ্যানিম্যান যা বলেছেন তা হচ্ছে, প্রতিটি হোমিওপ্যাথি ঔষধের কি পরিমাণ মাত্রা রোগীর আরোগ্য সাধনের জন্য যথেষ্ট অথচ তা এতই
ক্ষুদ্র যে, তার দ্বারা রোগী সবচেয়ে আরামদায়কভাবে ও সবচেয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারে এ সমস্যার সমাধান আনুমানিকভাবে বা কোন
প্রকার বাকচাতুর্যের দ্বারা দেয়া সম্ভব নয়। কারণ, মানব জাতির সকল প্রকার কাল্পনিক রোগের একটি তালিকা তৈরী করা যেমন অসম্ভব এ কাজটিও
তেমনি অসম্ভব।
বিশুদ্ধ পরীক্ষা, প্রতিটি রোগীর সংবেদনশীলতার সতর্ক পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসকের যথাযথ অভিজ্ঞতাই কেবল প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে মাত্রার ক্ষুদ্রত্ব
কত হবে তা স্থিার করতে পারে: এ প্রশ্নের উত্তরও ২৭৮ নম্বর সূত্রেই পাওয়া যায় যেখানে হ্যানিম্যান বলেন –
‘Pure experiment, careful observation of the sensitiveness of each patient and accurate experience can alone determine this in each individual case.’
অর্থাৎ বিশুদ্ধ পরীক্ষা, প্রতিটি রোগীর সংবেদনশীলতার সতর্ক পর্যবেক্ষণ এবং যথাযথ অভিজ্ঞতাই কেবল প্রতিটি রোগী ক্ষেত্রে তা স্থিার করতে পারে।
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, হ্যানিম্যান কোন রোগীর ঔষধ নির্বাচনের পর তার জন্য ঔষধ প্রয়োগের পূর্বে হোমিওপ্যাথি ঔষধের মাত্রা নির্ধারণের
দায়িত্বটি চিকিৎসকের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ তা করতে হলে চিকিৎসকের যে বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার তা কোন চিকিৎসককে পূর্ব থেকেই
নির্ধারণ করে দেয়া সম্ভব নয়। এ জন্য চিকিৎসকের মধ্যে যে কয়টি বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকতে হবে তা হচ্ছে:-
- প্রতিটি রোগীর লক্ষণ সমষ্টি তৈরীর নিপুণতা যাকে বলা হয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রোগী পর্যবেক্ষণ বা রোগী পরীক্ষাকরণ ক্ষমতা।
- প্রতিটি রোগীর মধ্যে নিহিত সংবেদনশীলতার অনুধাবন ক্ষমতা এবং
- চিকিৎসকের দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতা সমন্বিত সামগ্রিক অভিজ্ঞতা।
একজন চিকিৎসকের উপরোক্ত তিনটি গুণের সমষ্টিই কেবলমাত্র একজন রোগী ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগী ক্ষুদ্র মাত্রাটি নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে।
এখানে একটি প্রশ্ন হতে পারে যে, অর্গাননের ২৭২ নম্বর সূত্রে পূর্বেই আমরা জেনেছি ১০০টি বড়িতে ১ গ্রেন হয় এরূপ ঔষধসিক্ত শুষ্ক বড়ির একটিমাত্র
বড়িই হচ্ছে সবচেয়ে ক্ষুদ্র মাত্রার মধ্যে একটি, তাহলে রোগীভেদে মাত্রা নির্ধারণ নিয়ে চিকিৎসকের আর কি ভূমিকা থাকতে পার?

হোমিওপ্যাথি ঔষধের মাত্রা বৃদ্ধি
এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, উপরোক্ত একটি মাত্রা বা নির্বাচিত একটি ঔষধ বা নির্বাচিত হোমিওপ্যাথি ঔষধের সরষিা দানার মতো একটি বড়ি জলে দ্রবীভূত
করে রোগীকে সরাসিরি খেতে দিলে বা রোগীক্ষেত্রে সরাসরি প্রয়োগ করলে অনেক রোগী উপকার পেলেও কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে রোগলক্ষণের
বৃদ্ধি হয়। এটা কেন হয়? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে রোগীর ধাতুগত বিভিন্নতা হেতু সংবেদনশীলতার তারমম্যের কারণে এমন হয়,যে কারণে হোমিওপ্যাথি
ঔষধের বা মাত্রার তরলীকরণের প্রয়োজন হয়। কারণ আমরা আগেই জেনেছি যে, ঔষধের একটি মাত্রা বা নির্বাচিত একটি ঔষধ যতবারতরলী করণ করা
হয় তা তত বেশী সূক্ষ্ম বা ক্ষুদ্র হয় কিন্তু শক্তি অপরিবর্তিত থাকে।
কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, নিরাপদ আরোগ্যের জন্য রোগীর ধাতুগত বৈচিত্র্যের কারণে তার সংবেদনশীলতার তারতম্যের উপর নির্ভর করে নির্বাচিত
হোমিওপ্যাথি ঔষধের মাত্রাকে প্রয়োজনমতো সূক্ষ্ম বা ক্ষুদ্র করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু কোন্ রোগীর জন্য তা কতটা ক্ষুদ্র করতে হবে তা নির্ভর করে
চিকিৎসকের রোগী পর্যবেক্ষণ
ক্ষমতা এবং অভিজ্ঞতার উপর যে কারণে হ্যানিম্যান বলেছেন যে, কোন্ রোগীর জন্য মাত্রার ক্ষুদ্রত্ব কত হবে অর্থাৎ, মাত্রাটিকে কত বার তরলীকরণ
করতে হবে তা পূর্ব থেকেই নির্ধারিত করে দেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, চিকিৎসক তার কোন্ রোগীকে নির্বাচিত ঔষধটি কতবার অধিকতর
তরলীকরণ করে ক্ষুদ্রতর কোন্ মাত্রা প্রয়োগ করবেন এ সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হবে।
আর এ জন্য চিকিৎসক যদি বিশুদ্ধ পরীক্ষ-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর লক্ষণসমষ্টি তৈরী করতে সক্ষম হোন, রোগীর ধাতুগত অবস্থাা নির্ণয় করে তার
সংবেদনশীলতা অনুধাবন করতে পারেন এবং তিনি যদি অভিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ হোন তাহলে নির্বাচিত ঔষধটি কতবার তরলীকরণ করে রোগীকে খা
ওয়াতে হবে তা তিনি নির্ণয় করতে পারবেন।
3 thoughts on “হোমিওপ্যাথি ঔষধের ক্ষুদ্র মাত্রা”
Comments are closed.