হোমিওপ্যাথিক অর্গানন ১৫২ ব্যাখ্যা – এই অনুচ্ছেদ থেকে আমরা যা জানতে পারি তা হচ্ছে,
পর্যাপ্ত সংখ্যক ঔষধ যদি রোগী দেখা শুরু করার আগেই আমাদের খুব ভাল করে অধ্যয়ন করে আয়ত্ত করা থাকে তাহলে চিকিৎসা প্রার্থী হয়ে যে সমস্ত রোগী আমাদের কাছে আসে ,
তাদের জন্য ঔষধ র্নিাচন করা তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। তরুণ রোগ যতবেশী গুরুতর হয় বৈশিষ্টপূর্ণ লক্ষণ পাওয়াও তত বেশী সহজ হয় :
‘The worse the acute disease is, of so much the more numerous and striking symptoms is it generally composed, but with so much the more certainty may a suitable remedy for it be found, if there be a sufficient number of medicines known,
with respect to their positive action, to choose from. Among the lists of symptoms of many medicines it will not be difficult to find one from whose separate disease elements an antitype of curative artificial disease, very like the totality of the symptoms of the natural disease, may be constructed, and such a medicine is the desired remedy.’
অর্থাৎ, তরুণ রোগ যত বেশী গুরুতর হয় তত বেশী বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমূহও তাতে পাওয়া যায় এবং সুস্পষ্ট লক্ষণযুক্ত পর্যাপ্ত সংখ্যক ঔষধ যদি জানা থাকে তাহলে সেখান থেকে নিশ্চিতভাবে উপযুক্ত একটি ঔষধও পাওয়া যায়।
অনেকগুলো ঔষধের লক্ষণসমষ্টি জানা থাকলে তাদের মধ্য থেকে একটি ঔষধ যার পৃথক রোগ উপাদানসমূহ হতে প্রাকৃতিক রোগের লক্ষণ সমষ্টির,
অনুরূপ আরোগ্যকর কৃত্রিম রোগের চিত্রটি অঙ্কন করা যায় এমন একটি ঔষধ নির্বাচন করা কঠিন কাজ নয় এবং এরূপ ঔষধই আকাঙ্খিত।
Read More: অর্গানন অভ মেডিসিন সূত্র-৩ এবং ৪
হ্যানিম্যান এখানে যা বুঝাতে চেয়েছেন তার সার কথা হচ্ছে, তরুন রোগ যত বেশী তীব্র হয় তার লক্ষণসমূহও তত বেশী স্পষ্ট ও সংখ্যায় অধিক হয়।
অপরদিকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমন্বিত অনেকগুলো ঔষধ যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে তাদের মধ্য
থেকে ঐ রোগের সদৃশ লক্ষণবিশিষ্ট একটি ঔষধ নির্বাচন করা কোন কঠিন কাজ নয়। প্রাকৃতিক রোগের অনুরূপ কৃত্রিম লক্ষণবিশিষ্ট এমন একটি ঔষধই আকাঙ্খিত ঔষধ।

ব্যাখ্যা: এই অনুচ্ছেদ থেকে আমরা যা জানতে পারি তা হচ্ছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক ঔষধ যদি রোগী দেখা শুরু করার আগেই,
আমাদের খুব ভাল করে অধ্যয়ন করে আয়ত্ত করা থাকে তাহলে চিকিৎসা প্রার্থী হয়ে যে সমস্ত রোগী আমাদের কাছে আসে তাদের জন্য ঔষধ
র্নিাচন করা তেমন কোন কঠিন কাজ নয়।
কারণ আমরা যখন একজন রোগীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিই তখন সেই রোগীর ঔষধ নির্বাচনের জন্য তার একটি লক্ষণসমষ্টি তৈরী করি এবং রোগীর সেই লক্ষণসমষ্টি যে ঔষধের লক্ষণসমষ্টির সদৃশ হয় সেই ঔষধটিই হচ্ছে ঐ রোগীর নির্বাচিত ঔষধ এবং রোগীর লক্ষণসমষ্টির ভিত্তিতে নির্বাচিত ঔষধটিকেই হ্যানিম্যান সংশ্লিষ্ট ঐ রোগীর স্পেসিফিক ঔষধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যথেষ্ট সংখ্যক ঔষধ পূর্ব থেকেই অধ্যয়ন করে আয়ত্ত করা না থাকলে রোগীর লক্ষণসমষ্টি যত নিখুত ভাবেই আমরা সংগ্রহ
করার চেষ্টা করিনা কেন তা যেমন কোন ভাবেই সম্ভব হবেনা তেমনি রোগীর লক্ষণসমষ্টির সদৃশ অর্থাৎ, অনুরূপ লক্ষণ সমষ্টিযুক্ত একটি ঔষধ হোমিওপ্যাথির বৃহৎ ঔষধ ভান্ডার থেকে বের করে আনাও আমাদের পক্ষে সম্ভব হবেনা।
রোগীর নির্বাচিত ঔষধ কোনটি হোমিওপ্যাথিক অর্গাননে?
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি লক্ষণসমষ্টির মাধ্যমে আর একটি লক্ষণসমষ্টি খুঁজে বের করতে হয়। অর্থাৎ,অনেকগুলি ঔষধের লক্ষণসমষ্টি পূর্ব থেকেই জানা থাকলে যখন কোন রোগী চিকিৎসা প্রার্থী হয়ে আমাদের কাছে আসে তখন ঐ রোগীর লক্ষণসমষ্টি পূর্বে অধ্যয়নকৃত ঔষধ সমূহের লক্ষণসমষ্টিগুলির যে কোন একটি লক্ষণসমষ্টির সাথে সদৃশ হবে এবং যে ঔষধটির লক্ষণ সমষ্টির সদৃশ হবে সেই ঔষধটিই হবে রোগীর নির্বাচিত ঔষধ।
হ্যানিম্যান এখানে দেখিয়েছেন যে, যেহেতু ঔষধের লক্ষণসমষ্টি এবং রোগীর লক্ষণসমষ্টি একটির সাথে অন্যটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কাজেই একজন চিকিৎসকের প্রথম এবং প্রধানতম কাজ হচ্ছে ঔষধগুলো অধ্যয়ন করে সেগুলোর প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা লক্ষণসমষ্টি আয়ত্ত করা যাতে রোগীর চিকিৎসা কালে চিকিৎসক রোগীর লক্ষণসমষ্টি ঔষধের লক্ষণ সমষ্টিগুলোর সাথে তুলনা করে রোগীর নির্বাচিত ঔষধটি নির্ণয় করতে পারেন।
হোমিওপ্যাথিক অর্গাননে চিকিৎসকের প্রথম কাজটি কি?
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের প্রথম এবং প্রধানতম কাজটি হলো – ঔষধগুলো অধ্যয়ন করে তাদের লক্ষণসমষ্টিগুলো আয়ত্ত করা একজন চিকিৎসকের প্রথম এবং প্রধানতম কাজ হলেও এ কাজটি ততটা সহজ নয়। কারণ একজন নবীন কিংবা অদক্ষ চিকিৎসক ম্যাটিরিয়া মেডিকার একটি ঔষধ এক নজরে পড়লেই তাঁর কাছে মনে হবে যে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা খুবই সহজ কাজ কিন্তু এরপর তিনি যে ঔষধটিই পড়বেন তাঁর কাছে মনে হবে যে, সেই ঔষধটিই তাঁর নিজের জন্য নির্বাচিত ঔষধ।
অর্থাৎ, ঐ ঔষধটিই তাঁর রোগ সাড়াবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটি তা নয়। আর তাই ঔষধ অধ্যয়ন করার আগে আমাদের জানতে হবে ঔষধ অধ্যয়ন করতে হয় কিভাবে।আশা করি ‘হোমিওপ্যাথিক অর্গানন ১৫২’ পড়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের উপকারে আসবে।