গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতাযা প্রি-কনসেপশন হেলথ নামেও পরিচিত, সুস্থ গর্ভাবস্থা মা এবং একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতার মাধ্যমে বাংলাদেশে গর্বকালীন মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে আসবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ নারীরা বিয়ের পর অনাদর ও অবহেলার মাধ্যমে সময়গুলো পার করেন।

কিন্তু যখন একটা বাচ্চা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করবেন তখন নিজেকে অবশ্যই সুস্থ রাখার চেষ্টা করবেন।

গর্ভধারণের সময় নারীর শরীরে অনেক পরিবর্তন ঘটে এবং এই পরিবর্তনগুলির সাথে মানিয়ে নিতে হলে নারীর শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হওয়া প্রয়োজন।

একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে তার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে তার এবং তার সন্তানের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত করতে পারে।

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি আজকে আমি আমার এ ব্লগে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

আশা করছি আপনারা আমার সাথে থাকবেন, চলুন আলোচনা শুরু করা যাক। 

চলুন আজকে আমরা জানবো কি কি টপিক গুলো আলোচনা করব –  

  • গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্যের যেসব যত্ন নেওয়া উচিত
  • গর্ভধারণের পূর্বে কি কি টেস্ট করা উচিত
  • গর্ভধারণের সঠিক বয়স
  • গর্ভধারণে সমস্যার কারণ
  • গর্ভধারণের জন্য কাদের ঝুঁকি আছে:
  • গর্ভধারণের সঠিক সময় কখন
  • গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য পদক্ষেপগুলি কি কি?
  • উপসংহার
  • পরিশেষে বলতে চাই

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্যের যেসব যত্ন নেওয়া উচিত

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আপনি যত বেশি পদক্ষেপ নেবেন, ততই আপনার গর্ভধারণ এবং প্রসব সুখকর হবে

আসুন দেখে নেই গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্যের যেসব যত্ন নেওয়া উচিত:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে তার খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি, whole grains এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি তাকে এবং তার সন্তানের পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে প্রতি রাতে অন্তত 7-8 ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এটি তাকে এবং তার সন্তানের শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। এটি তাকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, হাড় এবং পেশীকে শক্তিশালী করতে এবং রক্ত সঞ্চালনকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। এটি তাকে যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যা সনাক্ত করতে এবং তা চিকিৎসা করতে সাহায্য করবে।
  • ধূমপান এবং মদ্যপান বন্ধ করা: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে ধূমপান এবং মদ্যপান বন্ধ করা উচিত। এগুলি গর্ভপাত, গর্ভকালীন জটিলতা এবং শিশুর জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ায়।
  • যৌন সংক্রামিত রোগ পরীক্ষা করানো: একজন নারী গর্ভধারণের পূর্বে যৌন সংক্রামিত রোগ পরীক্ষা করানো উচিত। এটি তাকে যেকোনো যৌন সংক্রামিত রোগ সনাক্ত করতে এবং তা চিকিৎসা করতে সাহায্য করবে।

 

গর্ভধারণের পূর্বে কি কি টেস্ট করা উচিত

গর্ভধারণের পূর্বে একজন নারীকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এই টেস্টগুলি করা উচিত।

এটি তাকে গর্ভধারণের সময় যে কোনও জটিলতা সনাক্ত করতে এবং তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। আসুন দেখে নেওয়া যাক সে টেস্টগুলি কি কি?

  • রক্ত পরীক্ষা (blood test): রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে একজন নারীর হিমোগ্লোবিন, লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা, প্লেটলেট, থাইরয়েড হরমোন, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, লিপিড প্রোফাইল ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
  • মূত্র পরীক্ষা (urine test) : মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমে একজন নারীর মূত্রনালীর সংক্রমণ, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সংক্রামক রোগ (STIs), মূত্রনালীর ক্যান্সার ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
  • প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা (Pap smear test): এই পরীক্ষার মাধ্যমে একজন নারীর জরায়ুমুখের ক্যান্সার সনাক্ত করা হয়। 
  • মাইক্রোব্লাস্ট পরীক্ষা (Microblast test): মাইক্রোব্লাস্ট পরীক্ষার মাধ্যমে একজন নারীর গর্ভবতী কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।
  • ইউএসজি পরীক্ষা (usg test for pregnancy): ইউএসজি পরীক্ষার মাধ্যমে একজন নারীর জরায়ু, ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
  • পেশাগত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: যদি আপনি কোনও বিষাক্ত পদার্থ বা রাসায়নিক পদার্থের সাথে কাজ করেন তবে গর্ভবতী হওয়ার আগে আপনার পেশাগত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। এতে আপনার শরীরে যে কোনও বিষাক্ত পদার্থ বা রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পরীক্ষা করার মাধ্যমে শরীরের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
  • স্বাস্থ্যসেবা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ: গর্ভধারণের পূর্বে আপনার স্বাস্থ্যসেবা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার আপনাকে গর্ভধারণের আগে আপনার শরীরের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন এবং আপনাকে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করতে পারেন।

গর্ভধারণের সঠিক বয়স

যে কোনও বয়সে গর্ভধারণ করা সম্ভব। তবে, গর্ভধারণের আগে একজন স্বাস্থ্যসেবা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ গর্ভধারণের সাথে কিছু ঝুঁকি জড়িত থাকে, যা মহিলা এবং শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে। আপনার উচিত একজন ভালো গাইনোকোলজি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া।

তারা আপনাকে আপনার বয়স এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর ভিত্তি করে গর্ভধারণের জন্য সর্বোত্তম সময় সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক- 

গর্ভধারণের জন্য সর্বোত্তম বয়স ২০থেকে ৩৫ বছর। এই বয়সে মহিলারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সবচেয়ে বেশি সুস্থ থাকেন এবং এই বয়সে মহিলারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে উভয়ই সবচেয়ে বেশি উর্বর হন এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

২০বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে গর্ভধারণের জটিলতার ঝুঁকি বেশি থাকে, যেমন গর্ভপাত, অকাল গর্ভপাত এবং উচ্চ রক্তচাপ।

৩৫ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের মধ্যে গর্ভধারণের জটিলতার ঝুঁকিও বেশি থাকে, যেমন ডায়াবেটিস, গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ এবং প্রি-এক্লাম্পসিয়া।

তবে সুস্থ শিশু জন্মদানের জন্য স্বামী-স্ত্রী দুজনের বয়সের দিকেই খেয়াল রাখা উচিত।

নারীদের ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষদের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নিয়ে নেওয়া ভালো।

 

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতাগর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা

 

গর্ভধারণের জন্য কাদের ঝুঁকি আছে 

মহিলাদের বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে গর্ভধারণের ঝুঁকিগুলি বৃদ্ধি পায়।

যদি আপনি ৩৫ বছরের বেশি বয়সী হন তাহলে গর্ভধারণের সাথে আরও বেশি ঝুঁকিতে পরতে পারেন।

চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই ঝুঁকিগুলো কি কি? 

  • বয়স: 35 বছরের বেশি বয়সী নারীদের গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। 40 বছরের বেশি বয়সী নারীদের গর্ভধারণের ঝুঁকিগুলি বৃদ্ধি পায়।
  • ওজন: অতিরিক্ত ওজন বা অতিরিক্ত পাতলা নারীদের গর্ভধারণে ঝুঁকি বেশী। স্বাস্থ্যকর BMI (বডি মাস ইনডেক্স) 18.5 থেকে 24.9 এর মধ্যে। 
  • উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে প্রি-একলাম্পসিয়া দেখা দিতে পারে যা মা এবং শিশুর জন্য উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থায় প্রি-একলাম্পসিয়া,গর্ভপাত, গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ, প্রিম্যাচিউর বার্থ, নিম্ন জন্ম ওজন, জন্মগত ত্রুটি, ম্যাক্রোসোমিয়া এবং সিজারিয়ান সেকশনের ঝুঁকি বাড়ায়। 
  • গর্ভপাত: গর্ভপাত গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
  • মৃত সন্তান জন্ম: মৃত সন্তান জন্মের পর আবার গর্ভধারণের সম্ভাবনা কিছুটা কমে যায়।
  • জন্মগত ত্রুটি: জন্মগত ত্রুটি সহ একটি শিশু জন্মদানকারী একজন মহিলার আবার জন্মদানের সম্ভাবনা কম থাকে। 
  • মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ নারীদের গর্ভধারণে ঝুঁকি বেশী।

 

গর্ভধারণে সমস্যার কারণ

যদি আপনি গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এবং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গর্ভধারণ করতে পারছেন না, তাহলে এটি গর্ভধারণে সমস্যার কারণ হতে পারে।

এছাড়াও, যদি আপনার নিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব না হয়, অথবা আপনার মাসিক ঋতুস্রাব খুব অল্প সময়ের জন্য হয়, তাহলেও এটি গর্ভধারণে সমস্যার কারণ হতে পারে।

গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে তার অনেক কারণ আছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক সে কারণগুলো কি কি? 

  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। ৩৫ বছর বয়সের বেশি মহিলাদের এবং ৪০বছর বয়সের বেশি পুরুষদের গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।
  • ওজন: খুব বেশি বা খুব কম ওজন গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
  • হরমোনের সমস্যা: কিছু হরমোন সমস্যা, যেমন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS), গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
  • পুরুষের সমস্যা: পুরুষের শুক্রাণুতে সমস্যা থাকলেও গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।
  • পূর্ববর্তী চিকিৎসার ইতিহাস: কিছু পূর্ববর্তী চিকিৎসার ইতিহাস, যেমন জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা জরায়ুর আঘাত, গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
  • স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং থাইরয়েড সমস্যা, গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।
  • জীবনধারা: ধূমপান, অ্যালকোহল পান এবং ক্যাফিন গ্রহণ গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
  • অস্ত্রোপচার: কিছু অস্ত্রোপচার, যেমন টিউবেক্টমি বা হিস্টেরেক্টমি, গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।
  • মাদকদ্রব্যের ব্যবহার: মাদকদ্রব্যের ব্যবহার গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।

       Read More:গর্ভাবস্থা ও ডায়াবেটিস যেসব সতর্কতা আপনার জরুরী

গর্ভধারণের সঠিক সময় কখন

গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল আপনার মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়।

সাধারণত, একজন মহিলার মাসিক চক্র ২৮ দিনের হয়। মাসিক চক্রের ১৪তম দিন হল ডিম্বস্ফোটনের দিন।

ডিম্বস্ফোটনের দিন হল সেই দিন যখন ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম নিঃসৃত হয়। এই ডিম শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হতে পারে এবং একটি ভ্রূণের জন্ম দিতে পারে।

আসুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভধারণের সঠিক সময় কখন – যদি আপনি গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন তাহলে আপনার মাসিক চক্রের মাঝামাঝি সময়ে যৌন মিলন করা উচিত।

এটি আপনাকে ডিম্বস্ফোটনের সময় নিষিক্ত ডিম দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।

আপনি যদি আপনার মাসিক চক্র সম্পর্কে সচেতন না হন তাহলে আপনি একটি মাসিক চক্র ট্র্যাকার ব্যবহার করতে পারেন।

একটি মাসিক চক্র ট্র্যাকার আপনাকে আপনার মাসিক চক্রের সময়কাল, রক্তপাতের পরিমাণ এবং আপনার ডিম্বস্ফোটনের সময় সম্পর্কে তথ্য দেবে।

এটি আপনাকে গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে।

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা
গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য পদক্ষেপগুলি কি কি? 

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রয়োজন। গর্ভধারণকালীন মায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থা উপর নির্ভর করে শিশুর স্বাস্থ্য।

তাই গর্ভধারণের পূর্বে একজন নারীকে অবশ্যই একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দান করা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য আসুন দেখে নেওয়া যাক কি কি পদক্ষেপগুলি নেওয়া উচিত?

  • নারীদের গর্ভধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া: গর্ভধারণের পূর্বে নারীদের গর্ভধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। এতে তাদের গর্ভধারণের সময় কী কী বিষয়গুলিতে সচেতন থাকতে হবে এবং কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে সে সম্পর্কে অবগত করা হবে।
  • নারীদের গর্ভধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো: গর্ভধারণের পূর্বে নারীদের গর্ভধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। এতে তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে অবগত করা হবে এবং গর্ভধারণের সময় যে কোনও জটিলতা সনাক্ত করা হবে।
  • নারী শিক্ষা: নারীদের গর্ভধারণের পূর্বে তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। তাদের অবশ্যই জানা উচিত যে গর্ভধারণের সময় তাদের শরীরে কী পরিবর্তনগুলি ঘটবে এবং এই পরিবর্তনগুলির সাথে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে।
  • তথ্য: গর্ভধারণের পূর্বে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করুন। গর্ভধারণ সম্পর্কে যতটা সম্ভব তথ্য জেনে আপনি আপনার শরীরকে প্রস্তুত করতে পারবেন এবং একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন। আপনি গর্ভধারণের বিষয়ে বই পড়তে পারেন, ওয়েবসাইট দেখতে পারেন বা একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন।
  • স্বাস্থ্যসেবা: নারীদের অবশ্যই গর্ভধারণের পূর্বে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। এটি তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে অবগত করতে সাহায্য করবে এবং গর্ভধারণের সময় যে কোনও জটিলতা সনাক্ত করতে সহায়তা করবে।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য: নারীদের অবশ্যই গর্ভধারণের পূর্বে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। এটি তাদের এবং তাদের সন্তানের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: নারীদের অবশ্যই গর্ভধারণের পূর্বে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। এটি তাদের তাদের ওজননিয়ন্ত্রণে রাখতে, শক্তিশালী পেশী গড়ে তুলতে এবং সন্তানের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করবে।
  • ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম নিন। গর্ভধারণের সময় আপনার শরীরকে আরও বেশি ঘুমের প্রয়োজন। তাই গর্ভধারণের পূর্ব থেকেই পর্যাপ্ত ঘুম নিন।
  • ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার: নারীদের অবশ্যই গর্ভধারণের পূর্বে ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা উচিত। এগুলি গর্ভধারণের সময় মা এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: নারীদের অবশ্যই গর্ভধারণের পূর্বে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া উচিত। তারা অবশ্যই তাদের মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
  • মানসিক চাপ: মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ গর্ভধারণের সময় জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গর্ভধারণের পূর্ব থেকেই মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। আপনি যোগব্যায়াম, ধ্যান বা বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে মানসিক চাপ কমাতে পারেন।

 

উপসংহার

আপনি যদি গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এবং এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ করতে না পারেন, তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত। ডাক্তার আপনার গর্ভধারণের সমস্যার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিবেন। 

গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা অবহেলা করবেন না।

গর্ভধারণের সময় একজন নারীর শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ হওয়া প্রয়োজন। তাই গর্ভধারণের পূর্বে একজন নারীকে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলিতে সচেতন হতে হবে।

 

পরিশেষে বলতে চাই

পরিশেষে বলতে চাই হোমিওপ্যাথিতে গর্ভধারণের সমস্যার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিলে ত্রুটি মুক্ত হওয়া যায় এবং নরমালে বাচ্চা প্রসব হয় ও মা এবং নবজাতক উভয়ই সুস্থ্য থাকে। প্রয়োজন শুধু লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া এবং হোমিওপ্যাথিতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। 

আপনি যদি আমার ব্লগটি ভালভাবে পড়ে থাকেন তাহলে গর্ভধারণের পূর্বে নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা এই ব্লগটি নিশ্চয়ই আপনার কোন  উপকারে আসবে।

আমার এই ব্লগ যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানান অথবা যে টপিক সম্পর্কে জানতে চান অনুগ্রহপূর্বক আমাকে কমেন্ট করুন। সোশ্যাল মিডিয়াতে অথবা আমার পেজে।

আমি চেষ্টা করব আপনাদের মনের মত করে উত্তর দেওয়ার জন্য। ধৈর্য ধরে এতক্ষন আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ 

Resources:

   1. https://www.shajgoj.com/7-tips-for-women-conceive/

2. https://www.bbc.com/bengali/articles/crgxpel3j8go

 

 

 

Share this content:

Dr. Khatun invites you to join her in this journey with City Homeo. Your engagement and encouragement are crucial in advancing this endeavor. Together, we can strive towards a healthier community and a better tomorrow.