Autoimmune Diseases কি? জীবানু Autoimmune Diseases এমন একটি Diseases যা জীবানুদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে কোন এক সময় নিজেই জীবানুতে পরিনত হয়ে যায়।
Autoimmune জীবানু শব্দটির সঠিক মেডিকেল অর্থ প্রতিরক্ষা। মানুষের দেহে ইমিউন সিস্টেম (immune system)নামক খুব সংবেদনশীল এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি প্রতিরক্ষা পদ্ধতি রয়েছে। জীবানু অটোইমিউন ডিজিজ মানবদেহের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি রোগ। চলুন আগে জেনে নেই এই
ইমিউনসিস্টেম কি এবং তা কাজ করে কিভাবে?
Autoimmune জীবানু সিস্টেম বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খুবই ত্বরিত গতিতে প্রায় সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস এবং অন্যান্য জীবানু কে সনাক্ত করতে এবং ধ্বংস করে দিতে পারে। কোন কারণে যখন এটা ব্যর্থ হয় কেবল মাত্র তখনই শরীর জীবানু দ্বারা রোগাক্রান্ত হতে পারে। শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমের কারণেই আমরা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন এবং তার ও অধিক জীবানু পরিবেষ্টিত থাকা সত্তেও খুব কম সময়েই ইনফেকশন (infection)এর কবলে পড়ি।

তবে হ্যা, কিছু কিছু রোগ আছে যা আমাদের ইমিউন সিস্টেম কে দুর্বল করে এর কার্যকারিতা হ্রাস করে দেয়,কিছু কিছু আবার একে একদম শেষ করে দেয়। কিছু কিছু ঔষধ সেবনের কারনেও ইমিউন সিস্টেম দুর্বল এবং অকার্যকর হতে পারে। ইমিউন সিস্টেম দুর্বল এবং অকার্যকর হবার কারনে মানবদেহ অতি সহজেই যে কোন জীবানুর সংক্রামনে জরাগ্রস্থ এবং ধরাশয়ী হতে পারে। আগেই বলেছি ইমিউন সিস্টেম কাজ করে দুটি – এক জীবানু বা বহিঃশ্ত্রু কে সনাক্ত করে আর দুই তাকে ধ্বংস করে। রক্তের শ্বেত কণিকা (WBC-white blood cell)এর মাধ্যমেই সে এই কাজটি সম্পন্ন করে। মূলত ভিন্ন ভিন্ন ধরনের শ্বেত কনিকা এই সনাক্তকরণ এবং ধ্বংস করার কাজে ব্যবহৃতহয়। অনেক সময় একধরনের কণিকাই দুটি কাজ করে থাকে।
যখন কোন শ্বেত কনিকা একটি জীবানু (organism) বা বহিশত্রুকে (foreign body)সনাক্ত করতে পারে সাথে সাথে সে অন্যান্য শ্বেত কনিকাদের কাছে সংকেত পাঠিয়ে দেয়। এই সংকেত পেয়ে একগাদা নতুন ধরনের শ্বেত কণিকা জীবানুর চারপাশে চলে আসে। এই সংকেতের তীব্রতার উপর নির্ভর করে কি সংখ্যক নতুন শ্বেত কনিকা যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাত্রা শুরু করবে। এতো গেল সুস্থ্য শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা,কি হয় যখন Autoimmune Diseases হয়। এ রোগ হলে শরীরের শ্বেত কনিকা গুলোর জীবানু ধ্বংস করার সকল ক্ষমতাই ঠিক থাকে।
Autoimmune গন্ডগোল দেখা দেয় জীবানু বা বহিশত্রু সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে। সনাক্তকারী শ্বেত কণিকারা তখন চিনতে ভুলে যায় কোনটা শরীরের অংশ আর কোনটা বহিশত্রু। এর ফলে তারা নিজের শরীরের বিভিন্ন কোষ (cell), কলা (tissue), ঝিল্লি (membrane), অঙ্গ (organ) ইত্যাদিকে বহিশত্রু হিসেবে সনাক্ত করে সংকেত পাঠিয়ে দেয়, তৈরি হয় অটোএন্টিবডি (autoantibody).আর ধ্বংস করার ক্ষমতা সম্পন্ন শ্বেত কনিকারা যাদের চোখ কান বাধা তারা দেদারসে নিজের দেহের সেসব কোষ, কলা আর অঙ্গকেই ধ্বংস করতে থাকে। আর তাই Autoimmune Diseases হলে মানুষের নিজের প্রতিরক্ষা সিস্টেম নিজের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষনা করে। তার মানে কি এই যে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিটির তখনই মৃত্যু ঘটবে?
আদৌ তেমন কিছু নয়। কারন এই সনাক্তকারী কনিকা গুলোর অল্প কিছু কোষ বা কলা কে সনাক্ত করতে ভুল করে, সব কলাকে নয়। আর তাই যে সব কলা বা টিস্যু সনাক্ত হতে ভুল হয় ঐসব টিস্যু বা অঙ্গই রোগাক্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

প্রশ্ন জাগতে পারে এ রোগের কি কোন চিকিৎসা আছে? উত্তরে বলবো অবশ্যই আছে। যে অঙ্গটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তার যা কাজ তা অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নিলেই তো হয়ে যায়।যেমন কারো যদি অগ্নাশয় (pancrease)আক্রান্ত হয় আর এর কারনে ইনসুলিন (insulin)উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় তবে তো ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দিয়ে অতি সহজেই এর সমাধান করা যায়। আর আগেই বলেছি কিছু কিছু ঔষধের কারনে ইমিউন সিস্টেমএর কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে, ঐ সকল ঔষধ (immune suppressor drug) ব্যবহার করে আগ্রাসী ধ্বংস কারী শ্বেত কণিকার জয়রথ সহজেই দমিয়ে দেয়া যায়।
তবে ঐসব ব্যবহারে যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তা কিন্ত নয়। তবে হোমিওপ্যাথিতে এর সমাধান আছে । তাই কখন সেসব ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে সে সিদ্ধান্তটা আপনার চিকিৎসকের উপরই না হয় ছেড়ে দিন।
Read More:হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এর করণীয় কি?
নীচে পরিচিত কয়েকটি Autoimmune Diseases নাম দেয়া হল-
রিউমেটিক ফিভার (rheumatic fever)- আক্রান্ত অংগের নাম – হার্ট ভাল্ভ (heart valve)রিউমাটয়েড আর্থাইটিস (rheumatoid arthritis) অস্থিসন্ধি (joint) ডায়াবেটিস মেলাইটাস টাইপ ওয়ান (type 1 diabetes mellitus)-অগ্নাশয়ের ইনসুলিন উতপাদনকারী কোষ।সিস্টেমিক স্কেলেরোসিস (systemic sclerosis) চর্ম (skin), রক্তনালী(blood vessel), কিডনী (kidney), ফুসফুস (lung), হৃদপিন্ড, পরিপাক তন্ত্র,ক্রনিক একটিভ হেপাটাইটিস (chronic activehepatitis (Autoimmune)- লিভার (liver) প্রাইমারি বিলিয়ারি সিরোসিস (primary biliary cirrhosis) লিভার। মায়াস্থেনিয়া গ্র্যাভিস (myasthenia graves) থাইমাস গ্রন্থি (thymus gland)গ্র্যাভস ডিজিজ– থাইরয়েড গ্রন্থি (thyroid gland), Autoimmune থাইরইডাইটিস- থাইরয়েড গ্রন্থি, Autoimmune প্যাঙ্ক্রিয়াটাইটিস, অগ্নাশয় (pancrease), অটোইমিউন থ্রম্বোসাইটোসিস (autoimmune thrombocytosis), অনুচক্রিকা/প্লাটেলেট (platelets), অটোইমিউন গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস (autoimmune glomerulo nephritis), বৃক্ক (kidney), এস, এল, ই (SLE), এবং শরীরের বহুবিধ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ (multi system organ).
উপরে যে রোগের নাম উল্লেখ করা হলো তা বিসদৃশ চিকিৎসকদের দৃষ্টিতে রোগ।আর আমাদের হোমিওপ্যাথির দৃষ্টিতে হচ্ছে রোগের ফল। মনে রাখতে হবে যে, হোমিওপ্যাথিতে রোগের নামে চিকিৎসা হয়না। হোমিওপ্যাথি মতে চিকিৎসা করতে হলে রোগের নাম ভুলে যেতে হবে এবং লক্ষণ সমষ্টির মাধ্যেেম রোগীর ঔষধটি কি তা খুঁজে বের করতে হবে। রোগীর জন্য ঔষধ নির্বাচন করবার পূর্বে প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে যে, রোগীর লক্ষণসমষ্টিই রোগ।
Resource: