ফুসফুসের ক্যান্সার এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা: ফুসফুসের ক্যান্সার রোগটি একটি মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি। আজকাল এই রোগের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে নারীদের তুলনায় পুরুষদের আক্রান্ত হার বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (IARC)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সার অন্যতম প্রধান।
বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ পুরুষের মধ্যে প্রায় ১৭ জন এবং প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে প্রায় ৭ জন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়,২০১৮ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী। ৪০বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার দুর্লভ।
চলুন জেনে নেই আজকে কি কি টপিক গুলো নিয়ে আলোচনা করব-
ফুসফুসের ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ, যা আধুনিক চিকিৎসা ও হোমিওপ্যাথি মাধ্যমে উপশম সম্ভব। সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা রোগীর সুস্থতার আশা জাগায়। যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে চিকিৎসায় সফলতার সম্ভাবনা বাড়ে।
ফুসফুসের ক্যান্সার এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
ফুসফুসের ক্যান্সার এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এই পদ্ধতিতে রোগীর বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করে রোগীর শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন করা হয়। কোন কাটা ছেড়ার প্রয়োজন পড়ে না, বিনা কষ্টে মুক্তি লাভ করতে পারে।
চলুন আজকে এ সমস্যা থেকে কিভাবে সমাধান পাওয়া যায় তার ওপর ভিত্তি করে কিছু আলোচনা করি। আশা করি আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক। আজকের আলোচনা থেকে আমরা নিম্নলিখিত ঔষধগুলি সম্পর্কে জানবো।
এই ঔষধ গুলো অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তার তার ধাতুগত লক্ষণ মিলিয়ে দিয়ে দিয়ে থাকেন। দয়া করে আপনারা ডাক্তারের কাছে না যেয়ে, ঔষধগুলো নিজে নিজে খেয়ে হোমিওপ্যাথির বদনাম করবেন না।
Hydroquinone
হাইড্রোকুইনোন: ফুসফুসের ক্যান্সারের সাথে যদি হার্টের দুর্বলতা ও শ্বাসকষ্ট লক্ষণগুলো পাওয়া যায় তাহলে এই ঔষধটি হবে ফুসফুসের ক্যান্সারের উপযুক্ত ঔষধ।
Acalypha indica
একালাইফা ইন্ডিকা: ফুসফুস অঞ্চলে জ্বালাবোধ শুষ্ক এবং কঠিন কাশি।তার সাথে রক্তমিশ্রিত থুতু সকালে এবং রাত্রে বাড়ে। সবসময় বুকে তীব্র ব্যথা। রক্ত উজ্জ্বল লাল এবং সকালে বেশি পরিমাণে রক্ত উঠে না। রক্ত কালচে ও জমাট বাঁধা দুপুরের পরে উঠে।
Argentum Metallicum
আর্জেন্ট মেট: সুপ্রাস্টারন্যাল ফসার কাছে একটি ছোট্ট স্থানে ব্যথা অনুভূত হয়। কথা বলার সময় ব্যথা বৃদ্ধি পায়। হাসির সময় কাশি, দুপুরের দিকে ঘুষঘুষে জ্বর। প্রতিবার কথা বলার সময় গলা খাঁকারি দিতে হয়। পরিবর্তনশীল কণ্ঠস্বর। বামদিকের নিচে পাঁজরার অস্থিস্থানে বেদনা। খুব সহজেই শ্লেষ্মা নির্গত হয়, শ্লেষ্মা দেখতে অনেকটা সিদ্ধ করা বার্লির মত।
Aranea diadema
এরানিয়া ডাইয়েডিমা: পাঁজরের অস্থিতে থাকা স্নায়ুতে ব্যথা।ব্যথা স্নায়ুর প্রান্ত ভাগ থেকে মেরুদণ্ড পর্যন্ত। ফুসফুস থেকে উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্তস্রাব। রোগী মনে করে তার শরীরের কোন অংশ বড় হয়ে যাচ্ছে এবং ভারী হচ্ছে। যেমন তার হাতগুলো বা কোন অঙ্গ ঘুম থেকে উঠে দেখবে দ্বিগুণ বড় হয়ে গেছে মনে হয়।
Arsenicum album
আর্সেনিকম অ্যালবাম: রোগী শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে অস্থির। আক্রান্ত অঙ্গ জ্বালা এবং উত্তপ্ত। আবার উত্তাপে রোগের উপশম। ডান দিকের ফুসফুসের উপরিভাগের তৃতীয় স্তর থেকে তীরবিদ্ধবৎ ব্যথা। তার সাথে হাঁপানি মধ্যরাত্রে বৃদ্ধি। কিছুতেই শুয়ে থাকতে পারে না, শ্বাস বন্ধ হবার ভয়। কাশির সাথে রক্ত উঠে। তার সাথে দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ব্যথা এবং জ্বালা উত্তাপ। অনেকটা গন্ধকের দোয়া ফুসফুসে যাবার পর যে ধরনের কাশি হয়। শুষ্ক কাশি কিছু পান করার পর বৃদ্ধি।
Arsenicum iodatum
আর্সেনিক আইওডাটাম: দীর্ঘকাল স্থায়ী জ্বালাকর ও ক্ষতকর স্রাবে ঔষধটি বিশেষ উপকারী । যে সকল শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী হতে স্রাবটি উৎপন্ন হয় এবং যে সকল শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর উপর দিয়ে স্রাব নির্গত হয় এবং যে স্থানের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় উভয় অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী লাল, প্রদাহিত, স্ফীত, জ্বালাকর এবং ক্যানসার লক্ষণ যুক্ত। স্রাব মিউকাস মেমব্রেন থেকে শুরু হয় ঐ স্রাব অত্যন্ত দুর্গন্ধ যুক্ত এবং জলবৎ। কাশি তৎসহ নাসারন্ধ্র দুটি শুষ্ক এবং আবদ্ধ। পুরাতন ব্রংকাইটিস,কাশি শুষ্ক এবং সামান্য শ্লেষ্মা উঠে। বার বার জ্বর লক্ষণ এবং নিশা ঘর্ম। ঘর্ম অত্যধিক যেন গোসল করে উঠেছে। উপরোক্ত লক্ষণগুলো পেলে ফুসফুস ক্যান্সারের উপযুক্ত ঔষধ আর্সেনিকআইওডাটাম।
Bryonia Alba
ব্রায়োনিয়া এল্বা: বারে বারে গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়ার ইচ্ছা যার ফলে ফুসফুস ফুলে যায়। কণ্ঠনালী ও শ্বাসনালীতে টাটানি ব্যথা। দম বন্ধ কর শুষ্ক কাশি যা রাত্রিতে অথবা খাবার পর বা পান করার পর বৃদ্ধি। তার সাথে বমি এবং বুকের ভিতরে সুঁচ ফুটার মত ব্যথা। কষ্টকর দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস যা নড়াচড়ায় বৃদ্ধি। কাশির সাথে মনে হয় বুকটি খন্ড খন্ড হয়ে বেরিয়ে যাবে। কাশির সময় রোগী হাত দিয়ে বুক চেপে ধরতে বাধ্য হয়। বুকের নিচে ভারী বোধ। ডান দিকের কাঁধ পর্যন্ত এটি প্রসারিত হয়। মরচে বর্ণের বা ইটের গুড়ার বর্ণের ন্যায় শ্লেষ্মাস্রাব।
Conium Maculatum
কোনিয়াম ম্যাকুল্যাটাম: সামান্য শারীরিক পরিশ্রমে হাঁপায়, বুকের ভিতর সংকোচন, বুকের ভিতর বেদনা। একটানা শুষ্ক কাশি তার সাথে চুলকানি, গলায় এবং ফুসফুসে। হাসলে বা কথা বলার সময় কাশির বৃদ্ধি।
Cobaltum metallicum
কোবাল্টাম মেটালিকাম: ফুসফুসের ক্যান্সারের সাথে যদি পিঠে ব্যাথা থাকে, পিঠের ব্যথা যদি বসলে বৃদ্ধি এবং শুয়ে থাকলে উপশম হয়।তাহলে এই ঔষধটি হবে তার জন্য উপযুক্ত ঔষধ।
Crotlus horridus
ক্রোটালাস হরিডাস: কাশি তার সাথে রক্ত মিশ্রিত শ্লেষ্মা। কন্ঠনালীর ভিতর একটি শুষ্ক স্থানে সুড়সুড় কর অনুভূতি।
Guaiacum officinale
গুয়াইকাম অফিসিনালি: শ্বাস প্রশ্বাসরোধের ন্যায় অনুভূতি। শুষ্ক শক্ত কাশি, কাশির পরে দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস প্রশ্বাস। ফুসফুস স্থানে শুচিবৃদ্ধবৎ বেদনা তৎসহ ছোট ছোট শ্বাস প্রশ্বাস, যত সময় না গয়ার উঠে। বাত ব্যথার সাথে ফুসফুসের ক্যান্সার দেখা দিলে গুয়াইকাম অফিসিনালি একমাত্র ঔষধ।
Hydrastis Canadensis
হাইড্রাস্টিস ক্যানাডেনসিস: শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর উপর এই ঔষধের বিশেষ ক্রিয়া। স্রাব গাঢ়, দড়া দড়া এবং হরিদ্রাভ এই জাতীয় স্রাব শরীরের যে কোন অংশে উৎপন্ন হোক না কেন, বিশেষ করে শ্লেষ্মাস্রাবে বিশেষ উপযোগী। গল গহ্বর, উদর, জরায়ু, মূত্রনালী যেখানেই হোক না কেন শ্লেষ্মা স্রাবের এই বিশেষত্বে এর ব্যবহার করা যায়। বুকে কর্কশভাব এবং ব্যথাযুক্ত জ্বালাকর। শুষ্ক খকখকে কাশি। মাঝে মাঝে রোগী বেহোঁশ হয়ে পড়ে। সকল দেহে ঠাণ্ডা ঘাম দেখা যায়। বামপাশে চেপে শুলে শ্বাসরোধের ভাব হয়। বুক হতে বামকাঁধে ব্যথা প্রসারিত। ক্ষত রোগ এবং ক্ষত বা ক্যানসারে সুড় সুড় বোধ। এই রোগীর কখনো ক্ষুধা লাগে না।
Kali Bichromicum
ক্যালি বাইক্রোমিকাম: বিয়ার খাওয়ার কুফল জনিত ফুসফুসে ক্যান্সার।পাকস্থলী, অস্ত্র এবং শ্বাসযন্ত্রের মিউকাস মেমব্রেন এর উপর এর কাজ। রক্ত শূন্যতা এবং জ্বর না থাকা কেলিবাইক্রম এর চরিত্রগত লক্ষণ। যাদের সিফিলিস, গণ্ডমালার ইতিহাস বা ক্যানসারের লক্ষণ পাওয়া যায় তাদের পক্ষে এই ঔষধটি উপযোগী। রোগ লক্ষণ ভোরের দিকে বৃদ্ধি পায়। ব্যথা অতি দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে। এর যে কোন স্রাব দড়ির মতো লম্বা ও আঠালো। এই লক্ষণটি এই ঔষধের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। কাশি তার সাথে ব্যথা কাঁধ পর্যন্ত প্রসারিত হয়। কাশি জামা কাপড় খোলার পরে বৃদ্ধি পায়। কাশির সময় বুকের মাঝখান থেকে পিঠ পর্যন্ত ব্যথা।
Methylenum coeruleum
মিথিলেনাম কোয়েরুলিয়াম: এটি অস্ত্রোপচারের পরে প্রচুর পরিমাণে পুঁজ থাকলে।
প্রথমে ফুসফুসে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্ষত জাতীয় লক্ষণ দেখা দেয়, পরে ধীরে ধীরে ফুসফুসের ডিপস্তরগুলো এবং তার চারদিকের টিস্যুগুলোকে আক্রমণ করে। একটা সময় ইনফেকশন এত ছড়িয়ে পড়ে যে, মারাত্মক পচনশীল রূপ নেয় তারপর ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়ে পড়ে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।তার সঙ্গে পালমোনারী কোলাপস সৃষ্টি করে।
ফুসফুসেরক্যান্সারের লক্ষণগুলো কি কি?
ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ক্যান্সার হল এই ফুসফুসের ক্যান্সার নির্ণয় করা। কারণ প্রথম দিকে এর তেমন কোন উপসর্গই ধরা পড়েন না। আর যখন ধরা পড়ে তখন সময় তো শেষ বেলায় এসে দাঁড়ায়। অনেক সময় নিরব দর্শকের মত দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না।আসুন জেনে নেই ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কি কি?
ফুসফুসের ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
ওজন হ্রাস: রোগী ধীরে ধীরে দুর্বল এবং অবসন্ন হয়ে পড়ে
কাশি: দীর্ঘস্থায়ী কাশি, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানের মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে
বুকে ব্যথা: অনেক সময় বুকে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পরবর্তীকালে ব্যথা পর পর দেখা দিতে পারে
রিপগুলো নষ্ট: একটা সময় ক্যান্সার বেশি আক্রান্ত করলে রিপগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে
গতি পরিবর্তিত: ক্যান্সার দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বা রোগ লক্ষণ বৃদ্ধি পেলে অনেক সময় রোগের গতি পরিবর্তিত হয়
রক্ত মিশ্রিত কফ: রক্ত মিশ্রিত কফ, ক্রনিক কাশি দেখা দেয়
বিভিন্ন উপসর্গ: প্রস্রাবে রক্ত পড়ে, চামড়ায় নোড দেখা দেয়, এছাড়া স্নায়ু আক্রান্ত হয়ে দেহের নানা স্থানে স্নায়বিক দুর্বলতা অক্ষমতা সৃষ্টি করে
দুর্গন্ধ: শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রচুর দুর্গন্ধ দেখা দেয়
শোথ: বুকে পানি চলে আসে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, বুকের অংশ ফোলে যায়
ফুসফুসেরক্যান্সারেরকারন
ফুসফুসের ক্যান্সার সাধারণত ফুসফুসের কোষে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা মিউটেশন থেকে উৎপন্ন হয়। এর প্রধান কারণসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো:
ধূমপান: সাধারণত ধূমপান এর জন্য প্রথমত দায়ী
প্যাসিভস্মোকিং: সেকেন্ডহ্যান্ড ধূমপানের শ্বাস গ্রহণকে কখনও কখনও প্যাসিভ স্মোকিং বলা হয়। অধূমপায়ীরা যারা নিয়মিত সেকেন্ডহ্যান্ড ধূমপানের সংস্পর্শে আসে, তারা ধূমপায়ীদের মতো এ রোগের ঝুঁকিতে পড়ে
পরিবেশ দূষণ: বায়ুদূষণ এবং রাসায়নিক পদার্থের এক্সপোজার। অবরুদ্ধ বিষাক্ত বাতাস শহরের আকাশ বাতাসকে কুলুষিত করে অনেক বেশি
পারিবারিক ইতিহাস: পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থেকে থাকলে
অতিরিক্ত এক্সরে করা: এক্স-রে ক্যানসারের অন্যতম কারণ। এক্স-রে ব্যবহারে মাত্র ৬ বছরের মধ্যে ত্বক-ক্যানসার ও পরবর্তীকালে রক্ত- ক্যানসার হতে দেখা যায়
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা: মাত্রাদিক ধূমপান এবং মদ্যপান। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাসস্থান এবং সুষম খাদ্যের অভাব
অন্যান্যরোগএবংসংক্রমণ: ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) বা ফুসফুসে পুনরাবৃত্ত সংক্রমণ, ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়
কেমিক্যাল: কয়লার খনি, বিল্ডিং নির্মাণ শ্রমিক, পেট্রোলিয়াম, কেমিক্যাল বা রাবার কারখানার শ্রমিক, জাহাজ শ্রমিক পরবর্তীকালে ফুসফুসের ক্যানসার হতে দেখা যায়
ক্ষতিকারক উপাদান : অ্যাসবেস্টস ছাদযুক্ত বাড়িতে বসবাসকারী ব্যক্তিরা ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকতে পারেন। অ্যাসবেস্টসে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম এবং নিকেলের মতো ক্ষতিকারক উপাদান থাকে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
ফুসফুসের ক্যান্সারের ধরণ গুলো কি কি?
ফুসফুসের ক্যান্সার মূলত দুটি প্রধান ধরণের হতে পারে:
ক্ষুদ্র কোষ ফুসফুসের ক্যান্সার (Small Cell Lung Cancer বা SCLC): এই ধরণের ক্যান্সার সাধারণত ভারী ধূমপায়ীদের মধ্যে দেখা যায়। এটি খুব দ্রুত শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
নন-স্মল সেল ফুসফুসের ক্যান্সার (Non-Small Cell Lung Cancer বা NSCLC): এটি ফুসফুস ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ ধরণ এবং এর আরও তিনটি উপধরণে বিভক্ত:
অ্যাডেনোকার্সিনোমাস (Adenocarcinomas): এই ক্যান্সার শ্বাসনালীর আস্তরণে উপস্থিত গ্রন্থি কোষে হয়, যা শ্লেষ্মা তৈরি করে।
স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা (Squamous Cell Carcinoma): এটি শ্বাসনালীগুলির পৃষ্ঠে থাকা কোষে হয়।
বড় কোষ কার্সিনোমা (Large Cell Carcinoma): এই ক্যান্সার কোষগুলি মাইক্রোস্কোপে বড় এবং বৃত্তের ন্যায় দেখা যায়।
অনির্ধারিত নন-স্মল সেল ফুসফুস ক্যান্সার:
কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষগুলি অনুন্নত থাকে এবং নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা যায় না।
ফুসফুসের ক্যান্সারের পর্যায়সমূহ
প্রথম পর্যায়: ক্যান্সার কেবল ফুসফুসে সীমাবদ্ধ।
দ্বিতীয় পর্যায়: ক্যান্সার ফুসফুস এবং নিকটবর্তী লিম্ফ নোডে পৌঁছেছে।
তৃতীয় পর্যায়: ক্যান্সার লিম্ফ নোডে থাকে এবং বুকের একটি পাশে বা উভয় পাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
চতুর্থ পর্যায়: ক্যান্সার উভয় ফুসফুস এবং আশেপাশের এলাকায় বা শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফুসফুসের ক্যান্সার এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
ফুসফুসের ক্যান্সারের প্যাথলজিক্যাল টেস্ট
ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় টেস্টগুলো:
সিটি স্ক্যান (CT Scan): ফুসফুসের ভিতরের অবস্থা পরীক্ষা করে।
বায়োপসি: ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পরীক্ষা করার জন্য।
ব্লাড টেস্ট: রক্তে অস্বাভাবিকতা নির্ণয় করতে।
পিইটি স্ক্যান (PET Scan): ক্যান্সারের বিস্তার নির্ণয়ে সাহায্য করে।
উপসংহার
ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে বাঁচতে এবং সঠিক চিকিৎসা পেতে রোগের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করা খুবই জরুরি। আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আতঙ্কিত হবেন না। প্যাথলজি টেস্ট করে নিশ্চিত হন ক্যান্সার হয়েছে কি না। অবহেলা করে মূল্যবান সময় অপচয় করবেন না।
তবে চেষ্টা করবেন দ্রুত হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের শরণাপন্ন হওয়ার।হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের শরণাপন্ন হওয়ার কথা কেন বলছি কারণ অপারেশন করলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ক্যান্সার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ক্যান্সারের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে। প্রয়োজন শুধু ডাক্তারকে রোগীর লক্ষণের সন্ধান দেওয়া।
আমার এই ব্লগ যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করবেন এবং নিয়মিত আরো বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেলগুলো পেতে হলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। ধৈর্য ধরে এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Dr. Khatun invites you to join her in this journey with City Homeo. Your engagement and encouragement are crucial in advancing this endeavor. Together, we can strive towards a healthier community and a better tomorrow.