আর্থ্রাইটিস রোগের হোমিও ঔষধ ও চিকিৎসা – নানা রোগের ভিড়ে এমন কিছু সমস্যা আছে, যা বছরের পর বছর ভোগায়, অথচ পুরোপুরি সারানোর উপায় নেই, তেমনই একটি হলো আথ্রাইটিস বা বাত। আমাদের দেশে প্রতি তিনজনে একজন এই অসুখে আক্রান্ত, এই আর্থ্রাইটিস আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অসংখ্য উন্নতি সত্ত্বেও, আথ্রাইটিস পুরোপুরি নির্মূল করা বেশ কঠিন। ঔষধ খেলে ব্যথা উপশম হয়, কিন্তু ঔষধ বন্ধ করলেই তা আবার ফিরে আসে। উপরন্তু, প্রচলিত ব্যথানাশক ও স্টেরয়েডের অতিরিক্ত খাওয়ায় শরীর নানা ক্ষতিকর সম্মুখীন হয়ে পড়ে।
এই কারণেই অনেক মানুষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত বিকল্প চিকিৎসার সন্ধানে হোমিওপ্যাথির দিকে ঝুঁকছেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রোগ নয় রোগীর চিকিৎসা করে, দেহের অন্তর্নিহিত ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী উপশম এনে দিতে পারে।

তাহলে আসুন, হোমিওপ্যাথি কিভাবে আথ্রাইটিসের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তা বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।আসুন কোন কোন টপিক নিয়ে আলোচনা করব তা দেখে নেই একবার।
- আথ্রাইটিস কি?
- আর্থ্রাইটিস-আধুনিক চিকিৎসার সীমাবদ্ধতা ও হোমিওপ্যাথির সম্ভাবনা
- আর্থ্রাইটিস রোগের হোমিও ঔষধ
- বাত বা আর্থ্রাইটিসের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কার্যকর কিছু মূল্যবান ঔষধ
- আর্থ্রাইটিস কত প্রকার?
- আর্থ্রাইটিস বা বাত কেন হয়?
- আর্থ্রাইটিস রোগের লক্ষণ কি
- আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধের উপায় কি?
আথ্রাইটিস কি?
‘অর্থো’ শব্দের অর্থ ‘জয়েন্ট’ বা সন্ধি/গাঁট। ‘আইটিস’ শব্দের অর্থ প্রদাহ। তাই আথ্রাইটিস হল শরীরের গাঁটের প্রদাহ (ফোলা ভাব) বা ব্যথা-জ্বালা-যন্ত্রণা৷
আর্থ্রাইটিস – আধুনিক চিকিৎসার সীমাবদ্ধতা ও হোমিওপ্যাথির সম্ভাবনা
আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান স্বীকার করে যে বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস, বিশেষ করে অটোইমিউনজাতীয় আর্থ্রাইটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়। তবে ঔষধের মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কিন্তু এর জন্য ব্যবহৃত মেথোট্রেক্সেট, কর্টিকোস্টেরয়েডের মতো ঔষধের ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয় না। উদাহরণস্বরূপ, বহু অভিজ্ঞ চিকিৎসক বিবাহযোগ্য পুরুষদের মেথোট্রেক্সেট দিতে অনাগ্রহী, কারণ এটি স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আর্থ্রাইটিস রোগের হোমিও ঔষধ
এই অবস্থায়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে হোমিওপ্যাথি নতুন আশার আলো দেখাতে পারে। হোমিওপ্যাথিতে রোগীর মানসিক ও শারীরিক লক্ষণগুলোর গভীর বিশ্লেষণের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসা প্রদান করা হয়, যা দীর্ঘমেয়াদী আরোগ্যের সম্ভাবনা তৈরি করে।
প্রাথমিক পর্যায়ে বাতজনিত ব্যথা উপশমের জন্য আমি সাধারণত রাস টক্স, সিমিসিফুগা, ম্যাগ ফস, গুয়েকাম, কোমোক্লেডিয়া ইত্যাদি স্বল্পস্থায়ী ঔষধ প্রয়োগ করি। ব্যথা কমার পর মূল রোগ নিরাময়ের লক্ষ্যে মেডোরিনাম, থুজা, সালফার, কস্টিকাম, সিপিয়া, রডোডেন্ড্রন প্রভৃতি ঔষধ রোগীর নির্দিষ্ট লক্ষণের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হয়।
Read more:মায়াজম কি
বাত বা আর্থ্রাইটিসের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কার্যকর কিছু মূল্যবান ঔষধ
বাতজনিত সমস্যা, বিশেষ করে ‘রিউমাটয়েড ও অস্টিওআর্থ্রাইটিস’, শুধু ব্যথার কারণ না, এটি জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে নষ্ট করে দিতে পারে। আধুনিক চিকিৎসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখে, কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য একমাত্র হোমিওপ্যাথি।
আজকে কিছু রেয়ার, আনকমন ঔষধের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো, আশা করি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন। নীচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কার্যকারিতা তুলে ধরা হলো –
অ্যাপোসাইনাম অ্যান্ড্র (Apocynum androsaemifolium)
ব্যথা যদি এদিক ওদিক চলে বেড়ায়, তাহলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। ব্যথার সাথে কিডনির সমস্যা। রক্তে ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন বেশি। মাথায় বা মেরুদণ্ডে আঘাতের পরে বাত হলে এবং নেট্রাম সালফ দিয়েও ব্যর্থ হলে এই ঔষধ অধিক কার্যকর।
প্যারিস কোয়াড্রিফোলিয়া (Paris quadrifolia)
স্পন্ডিলাইটিসজনিত ব্যথা যদি ঘাড় থেকে শুরু হয়ে বাঁ হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি দারুণ কাজ করে।
র্যামনাস ক্যালি (Ramnus Cali)
প্রদাহের ফলে যদি গাঁটে ফুলে যাওয়া ও পেশীতে ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়, তবে এটি প্রাথমিক পর্যায়ের উপযোগী ঔষধ।
হিপ্পোমেনস (Hippomens)
জুভেনাইল আথ্রাইটিসের অন্যতম ঔষধ। বিশেষ করে কব্জিতে ব্যথা হলে দেওয়া হয়।
স্ট্রেপটোকক্সিন রিউম্যাটিকা(Streptococcin Rheum)
রিউম্যাটিক হার্টে ইন্টারকারেন্ট ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
রিউম্যাটয়েড আথ্রাইটিস নেসোড (R. A. Nosode)
রিউম্যাটয়েড আর্থাইটিসের ইন্টারকারেন্ট ঔষধ। বংশে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাটিসের ইতিহাস থাকলে এটি কার্যকর।
অস্টিও আর্থাইটিস নোসোড (O.A. Nosode)
অস্টিও আথ্রাইটিসের ইন্টারকারেন্ট ঔষধ। অস্টিও আর্থাইটিসের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে এটি গুরুত্বপূর্ণঔষধ।
ওলিয়াম জ্যাকারিস অসিলাই (Oleum Jacaris os)
জুভেনাইল আথ্রাইটিসে টিউবারকিউলোসিসের পারিবারিক ইতিহাসসহ বাচ্চার অপুষ্টিজনিত সমস্যায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔষধ।
জ্যাকারান্ডা (Jacaranda)
ডান হাঁটুর ব্যথায় প্রাথমিক ব্যবহারের ঔষধ।
চিনিনাম সালফ (Chininum Sulph)
ম্যালেরিয়ার ইতিহাসযুক্ত রোগীর হঠাৎ প্রচণ্ড গ্যাটে ব্যথা।
আর্জেমন মেক্সিকানা (Argemone mexicana)
বাম হাঁটুর ব্যথায় প্রাথমিক ব্যবহারের ঔষধ।
ইকুইজিটাম আরভেন্স (Equisetum arvens)
আঘাতজনিত লিগামেন্ট টিয়ারের পর অস্টিওআথ্রাইটিস শুরু হলে অবশ্য ব্যবহার্য। কোষ্ঠকাঠিন্য, শীতকাতর রোগী।
মেথোট্রেক্সেট (Methotraxate)
বাতের চিকিৎসায় মেথোট্রেক্সেট ব্যবহারের কুফল দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
ক্যাসকারা সেগ্রাডা (Cascara Sagrada)
যেকোন প্রকারের বাতের ব্যথার সঙ্গে প্রচণ্ড কোষ্ঠবদ্ধতা।
ইকথাওলাম (Icthyolum)
সোরিয়াটিক আর্থাইটিসে টিউবারকিউলোসিসের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ব্যবহার করা হয়। লক্ষণাবলী সালফারের মত। কোমোফ্ল্যাডিয়া (Comocladia): ডান দিকের গাঁটে ব্যথা সহ লাল, ফোলা ভাব, গরমে উপশম।
কর্টিসোন (Cortisone)
বাতে স্টেরয়েড ব্যবহারের কুফল দূর করতে ব্যবহৃত হয়।
ডিপসিকাস সিলভেস্ট্রি (Dypsacus Sylv.)
ইকুইজেটাম আরভেন্সের কমপ্লিমেন্টারী। আঘাতের জন্য বা শরীরের বেশী ওজনের কারণে লিগামেন্টের ক্ষয় হলে ব্যবহার্য।
বসেন্নিয়া সেরাটা (Boswellia Serrata)
প্রদাহজনিত কারণে জয়েন্টের ফোলা।
হারপাগোফাইটাম (Harpagophytum)
আবহাওয়ার পরিবর্তনে ব্যথা বাড়ে।
সোলানাম লাইকো (Solanum lyco)
জ্বরের পর বাতের ব্যথা (ডেসমোডিয়াম)।

আর্থ্রাইটিস কত প্রকার?
প্রায় ১০০ ধরনের বা নামের আথ্রাইটিস হয়। এগুলোকে কারণ ও লক্ষণ অনুযায়ী তুলে ধরা হলো –
- আঘাত জনিত (মূলত: অস্টিও আর্থ্রাইটিস)
- ডিজেনারেটিভ বা ক্ষয়জনিত (অস্টিওআথ্রাইটিস)
- অটোইমিউন যেমন- জোগ্রেন সিনড্রোম, রেইটার্স ডিজিজ, সোরিয়াটিক আথ্রাইটিস, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এস.এল.ই. স্পন্ডাইলোসিস ইত্যাদি।
- ইনফেকশন জনিত যেমন – রিউম্যাটিক আর্থ্রাইটিস।
- মেটাবলিক কারণজনিত যেমন – গাউট।
- শিশুদের বাত – জুভেনাইল আথ্রাইটিস।
- ইডিওপ্যাথিক – যে বাতের কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
আর্থ্রাইটিস বা বাত কেন হয়?
১) অস্টিওআথ্রাইটিস: দেহের ওজন বাহী বড় বড় সন্ধিগুলির (হাঁটু, কোমর, পায়ের গোছ ইত্যাদি) মধ্যে থাকা কার্টিলেজগুলির ক্ষয়ের কারণে এই অসুখ হয়। এই ক্ষয়ের ফলে জয়েন্টের হাড়গুলির মধ্যে ঘষা লেগে প্রবল ব্যথা হয়, হাঁটু স্বাভাবিক ভাবে ভাঁজ করা অসম্ভব হয়ে ওঠে।
বংশে এই রোগের ইতিহাস থাকলে, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সে, চোট আঘাতের ইতিহাস থাকলে, দেহের ওজন অতিরিক্ত হলে ও মূলত: মহিলাদের এই রোগ বেশী হয়।
যে জয়েন্টে ব্যথা সেখানকার এক্সরে ও প্রয়োজনে কিছু রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ নির্ণয় করা হয়৷
২) রিউম্যাটয়েড আথ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন অসুখ বিশেষ করে ৩০-৪০ বছরের মহিলাদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। ব্যথা সকালের দিকে খুব বাড়ে।প্রথমদিকে হাত-পায়ের ছোট জয়েন্টগুলি, পরে কাঁধ, হাঁটু, কোমর আক্রান্ত হয়, জয়েন্ট লাল হয়ে ফুলে যায়, প্রচণ্ড ব্যথা হয়। পরে হাতের আঙুলগুলি বেঁকে যায়, সঙ্গে জ্বর, অ্যানিমিয়া, কিডনী, হার্ট, চোখ ইত্যাদি অঙ্গের সমস্যা দেখা দেয়।
রক্তপরীক্ষায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রিউম্যাটয়েড ফ্যাকটর পজিটিভ হয়।
Read more:সিফিলিস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
৩) অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এই রোগে ছেলেরা কমবয়সে (১৫-২৫ এর মধ্যে) এবং মেয়েরা একটু বেশী বয়সে আক্রাত্ত হয়। এটিও একধরনের অটোইমিউন রোগ। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কোমর, পিঠে অসহ্য যন্ত্রনা হয়।
ঘাড় কোমর স্টিফ হয়ে যায়, নড়লেই ব্যথা করে। ধীরে ধীরে কোমর ঝুঁকতে শুরু করে। এই রোগে মেরুদণ্ডের মাঝে থাকা ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্কগুলি নষ্ট হয়ে ভার্টিব্রাগুলি জুড়ে যায়। ফলে এক্সরে তে মেরুদণ্ডকে বাঁশের মত দেখায়।
এছাড়া রক্তে এইচ.এল.এ.বি ২৭ জেনেটিক ফ্যাক্টর পজিটিভ হয়।
৪) গাউট: শরীরে বিপাকক্রিয়ার ফলে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়ে গাঁটে জমতে থাকলে এই রোগ হয়। প্রথমে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ফুলে লাল হয়ে প্রচণ্ড ব্যথা ও জ্বর হয়।
পরে আঙ্গুলের গাঁট, কব্জি ইত্যাদি অন্যান্য জয়েন্টে ব্যথা হয়। পারিবারিক ইতিহাস, অতিরিক্ত ওজন, অত্যাধিক মদ্যপান, মাংস ও জংঙ্কফুড বেশী খেলে ইউরিক অ্যাসিডের প্রকোপ বাড়ে ৷
রক্তপরীক্ষায় ইউরিক অ্যাসিডের পরিমান বেশী হয়।
৫) ইনফেকসাস আথ্রাইটিস: এটি মূলত দু’ ধরনের ব্যাকটেরিয়াল এবং সেপটিক আথ্রাইটিস। যাদের টিউবারকিউলোসিস থাকে, তাদের টিউবারকুলোসিস ব্যকটেরিয়ার আক্রমণে গাঁটে ব্যথা হয়।
শরীরের কোন স্থানে সংক্রমণ থাকলে রক্ত মাধ্যমে সেই সংক্রমণ জয়েন্টে ছড়িয়ে পড়লে সেপটিক আথ্রাইটিস হয়। বেশী বয়সে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের পর ইনফেকশন হয়ে গেলে সেখান থেকে সেপটিক আথ্রাইটিস হওয়ার ভয় বেশী।
এক্ষেত্রে জয়েন্টের ফ্লুইড নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়।
৬) রিউম্যাটিক হার্ট: স্ট্রেপটোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এই রোগ হয়। সাধারণত বাচ্চাদের (৫-১৫ বছর) এই রোগ বেশী হতে দেখা যায়। প্রথমে গলা ব্যথা দেখা দেয়। এরপর ব্যাকটেরিয়া গাঁটের কানেক্টিভ টিসুকে আক্রমণ করে।
ফলে গাঁটে ব্যথা ও জ্বর শুরু হয়। এই ব্যাকটেরিয়ার হার্টের ভালভের প্রতি আকর্ষণের কারণে সেখানে বাসা বাঁধে ও ভালভের ক্ষতিসাধন করে। তখন রোগীর বারবার জ্বর আসে। অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি, গাঁটে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বুখ ধড়ফড়, চোখ লাল হয়ে থাকা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
থ্রোট সোয়াব কালচার করে স্ট্রেপটোকক্কাসের ইনফেকশন এবং রক্তপরীক্ষায় এ.এস. ও টাইটার বেশী পাওয়া যায়।
৭) সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস: সোরিয়াসিস রোগজনিত আথ্রাইটিস। চামড়ায় আঁশ ওঠে, নখে গর্ত, ভঙ্গুর নখসহ গাঁটে গাঁটে ব্যথা। এটিও একটি অটোইমিউন পর্যায়ভুক্ত রোগ।
৮) জুভেনাইল আথ্রাইটিস: বাচ্চাদের গাঁটে গাঁটে ব্যথা। এটি উপরোক্ত যেকোন পর্যায়ভুক্ত হতে পারে ইনফেকসাস বা সেপটিক অথবা কোন ইনফেকশন ছাড়াই গাঁটে ব্যথা। (রিঅ্যাকটিভ আর্থ্রাইটিস) যেমন – জুভেনাইল রিউম্যাটয়েড আথ্রাইটিস। কোন কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলে, তাকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আথ্রাইটিস।
সমস্যা অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা, এক্সরে, এম আর আই, পেট স্ক্যান, বোন স্ক্যান, জয়েন্টের ফ্লুইড ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
Read more:হোমিওপ্যাথি রোগীলিপি উদাহরণ
আর্থ্রাইটিস রোগের লক্ষণ কি
এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো এক বা একাধিক অস্থি-সন্ধিতে ক্রমশ ব্যথা ও আড়ষ্টতা, যা সাধারণত সকালে তীব্র থাকে এবং সারাদিনে কমে। হাত ও পা বেশি আক্রান্ত হলেও হাঁটু, কনুই, কাঁধ, নিতম্ব, গোড়ালি এমনকি চোয়াল ও ঘাড়ও আক্রান্ত হতে পারে।
সন্ধিগুলো ফুলে যায়, স্পর্শে সংবেদনশীল হয় এবং নড়াচড়ার সময় ব্যথা বাড়ে। মাঝে মাঝে এ রোগ এত তীব্র হয় যে রোগী অচল হয়ে পড়তে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে প্রদাহ পেশীবন্ধনী ও আশেপাশের টিস্যুকেও আক্রান্ত করে, যা ব্যথা ও ফোলার কারণ হতে পারে।
বিশেষ করে হাতে-পায়ের আঙুল নড়ানোর সময় কট্ কট্ শব্দ হতে পারে। হাঁটুর পেছনে কিংবা কনুইয়ের সংযোগস্থলে রস জমে ফোলাভাবও দেখা দিতে পারে। শরীরের অন্যান্য সন্ধিও আক্রান্ত হলে মুখ খোলা বা মাথা নড়ানো কষ্টকর হয়ে ওঠে।

আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধের উপায় কি?
যেকোন ধরনের আথ্রাইটিসেই কতকগুলি সাধারণ নিয়ম মেনে চলতে হয়।আমরা একটু চেষ্টা করলেই এই ভয়ংকর রোগ থেকে দূরে থাকতে পারে। আসুন জেনে নেই সে নিয়ম গুলো কি কি?
- ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা
- ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড, রেড মিট ইত্যাদি বর্জন করা
- চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত এক্সারসাইজ, সাইক্লিং, সাঁতার ইত্যাদি প্র্যাকটিস করা
- অস্টিও আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে হাঁটু মুড়ে মাটিতে না বসা, কমোট ব্যবহার করা
- ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশী খাওয়া
- মদ্য ও ধূমপান ত্যাগ করা
উপসংহার
জন্ম নিয়েছি রোগ থাকবেই আর সুস্থতার জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। ‘আর্থ্রাইটিস রোগের হোমিও ঔষধ ও চিকিৎসা’ নিয়ে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস ছোট্ট লিখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ধৈর্য ধরে এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
সিটি হোমিও
রূপায়ন মিলেনিয়াম স্কয়ার,দোকান নং-116
( গ্রাউন্ড ফ্লোর) -70, 70/Aপ্রগতি শরণি,
উত্তর বাড্ডা, ঢাকা 1212,বাংলাদেশ।
01736181642
Resources. https://marygreensmith.com/