খাদ্যের মধ্যে ঔষধ লুকিয়ে আছে। খাদ্য সর্বদা রোগীর রুচি অনুসারে যত্ন সহকারে নির্বাচন করতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য আমরা তো খাবার খাই। সেই খাবারটা যদি হয় আমাদের দেহের ক্ষয়পূরণ বৃদ্ধি সাধন কর্মশক্তি উৎপাদনে সক্ষম সম্পন্ন, সেটাই তো আদর্শ খাদ্য। দরুন আপনার ডাক্তার দূরে ঔষধও কাছে নাই তখন আপনি কি করবেন? ঘরে যা আছে তাই দিয়ে রোগীকে উপশম দিতে হবে।
কাশি
প্রচুর কাশিতে লং, আদা, লবণ এ তিনটা জিনিস একসাথে মুখে দিয়ে রাখলে ঘন ঘন কাশি থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। হাঁপানিতে
হাঁপানিতে মুখে ফিটকিরি রাখলে উপশম হয়।
জ্বর
ধরা যাক জ্বর হইছে তখন আমরা কি খাবার দেই? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়,মাংস ও ভালো ভালো লোভনীয় ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এবং রোগী দেখলে পছন্দ করবে সে খাবার গুলো দেই। কিন্তু সেটা উচিত নয়।এ ধরনের ক্ষেত্রে রোগীকে করলার ঝোল দিয়ে যদি কোন খাবার দেওয়া হয় তো মুখের রুচিটা ঠিক থাকে।
অনেক সময় জ্বর ভালো হয়ে গেলেও তার খাবারের প্রতি রুচি থাকে না। জ্বর হলে হুট করে ঔষধ না খেয়ে যদি সেখানে আনারস এর রস করে তার সাথে একটা লেবু চিপে রস করে দুটো একসাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যায়, আধাঘন্টার মধ্যেই জ্বর সেরে যায়।
এ ধরনের ক্ষেত্রে ঔষধের বেশি একটা দরকার পড়ে না। তারপরও যদি জ্বর থাকে তখন আমরা ডাক্তারের কাছে যেতেই পারি। যদি জ্বরের সাথে সর্দি ঠান্ডা কাশি থাকে তখন ঐ রসের সাথে একটু লবণ ও কাঁচামরিচ দিয়ে খেলে সেটাও চলে যায়

হাইপ্রেসার
হাইপ্রেসার প্রেসারটা হঠাৎ করে বেড়ে গেলে তেতুল দিয়ে রস না খেয়ে তখন কাঁচা রসুন ভর্তা করে খেতে দিনএবং প্রতিদিন একটা করে আনার বা ডালিম খেতে দিন প্রেসার নরমালে চলে আসবে।
সর্দি ঠান্ডা কাশি
সর্দি ঠান্ডা কাশি ও শ্বাসকষ্টসর্দি ঠান্ডা কাশি ও শ্বাসকষ্ট তখন কি করবেন?উপায় আছে- চোখ বন্ধ করে নাক মুখ দিয়ে ফুটন্ত গরম পানির ভাপ নিতে দেন ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত আর পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কুসুম গরম পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখুন। অন্ততপক্ষে রাতটা শান্তিতে কাটাতে পারবেন।
এলার্জি
আপনার এলার্জিতে গা চুলকাচ্ছে কি করবেন?ঘরে যদি কলা থাকে কলা খান দেখবেন চুলকানির কিছুটা উপশম হবে।খাদ্যের ইলিশ,চিংড়ি ,গরুর মাংস,ফার্মের মুরগির মাংস, কচু এবং যে খাবার খেলে এলার্জি হয় তা বন্ধ করতে হবে।মনেরাখতে হবে এলার্জি চাপা পরলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ক্যান্সার
ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করবেন তাকে যদি আপনি রেড মিট খাওয়া বন্ধ না করেন তাহলে সুফল পাবেন না। যতই ঔষধ দিয়ে যান। আমি এক প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করেছিলাম – রোগীকে আমি প্রথমেই বলেছিলাম নিরামিষ ভোজী হতে পারবেন?
তাহলে আপনাকে চিকিৎসা দিব। ইনশাল্লাহ ভালো হয়ে যাবেন। রোগী বলল আমি অনেক খাবার খেয়েছি কয়েকটা দিন না হয় আমি মাংস খেলাম না, ডাক্তার আমি বাঁচতে চাই ,আমাকে যেভাবে বলবেন আমি তার চেষ্টা করব। আমি বলব না যে,আমার ঔষধেই শুধু রোগী ভালো হয়েছিল।
Read More:হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ধাতুগত ঔষধ
আমি বলব রোগী খাদ্যপথ্য মেনেছিল বলেই সুস্থ হয়েছিল। রোগীকে বুঝাতে হবে ধরুন আপনি হিমালয়ের চূড়ায় উঠবেন তখন আপনাকে বলে দিবে নিচে তাকাবে না। নিচে তাকালে মাথা ঘোরে পড়ে যাবে আর উপরে ওঠা সম্ভব হবে না।
রোগীকে বলতে হবে মনে করুন আপনি এমন একটা দ্বীপে আছেন যেখানে মাংস খেলেই আপনার মৃত্যু। আপনাকে খুঁজে খুঁজে ওই খাবারগুলো খেতে হবে যেগুলোতে আপনি বেঁচে থাকতে পারবেন। রোগী আপনার কথা শুনবে, বোঝানোর মত করে বোঝান কথা শুনবে এবং সুস্থ হয়ে যাবে।
কিডনি
কিডনি রোগীর কলা এবং ডাব খাওয়া নিষেধ।এ দুটো খাবে মৃত্যুর টিকিট কাটা হয়ে যাবে। ইউরিক এসিড ওক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাবে। কিডনি রোগে বিচি বা গোটা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা।
ফলের মধ্যে শুধু আপেল ও পিয়ারা খেতে পারবে।কিডনি রোগীর রুচি কমে যায় দুর্বলতা দেখা দেয় তার জন্য আপনি পুদিনা পাতার রস এবং লেবুর রস একসাথে রস করে খেতে দিতে পারেন ।

ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসের খাবার-দাবার নিয়ে কিছু কথা বলি। যে সকল খাদ্য ফলমূল শাকসবজি সুগারের অংশ অধিক পরিমাণে আছে। তা খাওয়া যাবেনা বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য যেমন ভাত আলু আটা ময়দা সাবু বার্লি ইত্যাদি চিনিযুক্ত বা চিনি দিয়ে যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়া যাবেনা।চা খেতে পারবে তবে তা চিনি ছাড়া।
মাছ-মাংস টাটকা শাকসবজি লাউ কুমড়া বেগুন জালি কুমড়া মান কচু কড়াইশুঁটি প্রভৃতি আম জাম নাশপাতি জামরুল কমলা লেবু বাতাবি লেবু ও যে গুলোতে শর্করা কম আছে এই জাতীয় এবং সমস্ত প্রকার টক জাতীয় ফল খাওয়া যাবে।কাগজি লেবুর রসে পানি দিয়ে খেলে উপকার হয়।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীকে আজীবন খাবারের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। পরবর্তীতে ক্যান্সার রোগের খাওয়া-দাওয়ার নিয়ে আলোচনা করব।
1 thought on “খাদ্যের মধ্যে ঔষধ”
Comments are closed.